অবশেষে আবার হাতে চাঁদ জিতেন তিওয়ারির। ভোটের আগেই আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে জাতীয় মুখপাত্র। বেশ কিছুদিন ধরেই দলের তরফে নানা সর্বভারতীয় গণমাধ্যমে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছিল জিতেন তিওয়ারিকে। শিলমোহরটা জুটল মঙ্গলবার।
এবার থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবেই দলের হয়ে জাতীয় গণমাধ্যমগুলিতে যুক্তি দিতে এবং প্রতিযুক্তি খণ়্ডন করতে দেখা যাবে জিতেন তিওয়ারিকে।নতুন দায়িত্ব পেয়ে খুশি আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বলছেন, আমি কৃতজ্ঞ, যোগ্যতা প্রমাণের চেষ্টায় কোনও খামতি থাকবে না।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে জিতেন্দ্রর বাগ্মিতাকে কাজে লাগাতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। বিশেষত একটা সময় আইনজীবী ছিলেন জিতেন্দ্র। তাঁর সেই কথা বলার দক্ষতাকে ব্যবহার করে বিজেপির মোকাবিলা করতেই ‘ভুল’ মকুব করে দেওয়া হয়েছে। সেই দায়িত্ব পাওয়ার পর আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জানান, তাঁর উপর ভরসা রেখেছে তৃণমূল। তাতে আপ্লুত তিনি। বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি-সহ বিরোধীরা যে ভুয়ো প্রচার চালাবে, তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
এমনিতে একটা সময় মমতার আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন জিতেন্দ্র। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বরে সেই তাল কাটে। শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি যোগের আবহের মধ্যে পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব ছেড়ে দেন জিতেন্দ্র। বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েও দিয়েছিলেন। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের একাংশের বিরোধিতায় যাত্রাভঙ্গ হয়। কার্যত দু’কূল যাওয়ার আশঙ্কার মধ্যেই অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার রেশ ধরে জিতেন্দ্র জানান, তৃণমূলেই আছেন তিনি। কিন্তু আচমকা বিজেপির দিকে পা বাড়ানোর বিষয়টি তৃণমূলের তরফে একেবারেই ভালোভাবে নেওয়া হয়নি। দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন জিতেন্দ্র। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতেও সেভাবে দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। কমেছিল গুরুত্বও। তবে দলে আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠার মরিয়া চেষ্টা করছিলেন। ‘শাস্তি’ সত্ত্বেও নিজের উদ্যোগে দলের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সেইসবের মধ্যে গত ২৪ জানুয়ারি আসানসোলে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন জিতেন্দ্র। সেখানে ছিলেন মলয় ঘটক এবং অরূপ বিশ্বাস। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সেই অনুষ্ঠানের আগেই সম্ভবত বরফ গলতে শুরু করেছিল। তার রেশ ধরেই ‘অজ্ঞাতবাস’ পর্বের পর জিতেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাল তৃণমূল।