২০১৯ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড আরও একবার মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্বকাপের নক-আউট পর্বে।বিশ্লেষক ও ক্রিকেট সমর্থকদের মধ্যে বারবার আলোচনায় আসছে সেই লর্ডস ফাইনালের নাটকীয় সুপার ওভার এবং সমান রান করেও বেশি বাউন্ডারির কারণে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়।এই স্কোয়াডেও বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার দুই দলেই আছেন, যারা সেদিন লর্ডসেও ছিলেন।সেবার যেমন ইংল্যান্ড জয় পেয়েছে এই ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১ ম্যাচেও ইংল্যান্ড ১২ ম্যাচে জিতে এগিয়ে আছে, আর ৭টিতে নিউজিল্যান্ড জিতেছে।
অধিনায়কদ্বয় একই আছেন, ইংল্যান্ডের ইয়ন মরগান এবং নিউজিল্যান্ডের কেইন উইলিয়ামসন, তবে এটা ভিন্ন ফরম্যাট, ভিন্ন মাঠ, ভিন্ন পরিবেশ ও পরিস্থিতি, কে এগিয়ে কে পিছিয়ে এবারের দেখায়? ইংল্যান্ডের দলে একের পর এক ক্রিকেটার চোটে পড়ছেন।
বিশ্বকাপ শুরুর অনেক আগে থেকেই বেন স্টোকস নেই, বিশ্বকাপের আগে সুস্থ হয়ে ফিরতে পারেননি জফরা আর্চার, বিশ্বকাপ শুরুর আগে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে থেকেছেন মার্ক উড, বিশ্বকাপের মধ্যেই চোট পেয়েছেন পেস বোলার টাইরান মিলস।
আর সুপার টুয়েলভ পর্বের শেষ ম্যাচে ব্যাট করতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লেগে খুঁড়িয়ে মাঠ ছেড়েছেন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার ওপেনার জেসন রয়।
ইংল্যান্ডের স্কোয়াডে জনি বেয়ারস্টোর মতো ব্যাটসম্যান আছেন রয়ের জায়গা ব্যাট করতে নামার জন্য কিন্তু এটা দলের সুপার টুয়েলভ পর্বে ম্যাচজয়ী দলের সমন্বয়ে পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
অধিনায়ক মরগান বলেছেন, ড্রেসিংরুম জেসন রয়কে মিস করবে। ওপেনিং-য়ে আছেন জস বাটলার। যিনি ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে আছেন। টুর্নামেন্টের একমাত্র সেঞ্চুরিটি তিনি করেছেন।
জেসন রয় না থাকলেও ইংল্যান্ডের মূল শক্তি ব্যাটিংই।ওপেনিং-য়ে আছেন জস বাটলার। যিনি ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে আছেন। টুর্নামেন্টের একমাত্র সেঞ্চুরিটি তিনি করেছেন। ১৫০+ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করছেন বাটলার।এরপর আছেন টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ের ১ নম্বর ব্যাটসম্যান দাউয়িদ মালান।দারুণ ছন্দে বল পেটাচ্ছেন মইন আলী, মরগান ধীরে ধীরে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ব্যর্থতা পেছনে ফেলে ফর্মে ফিরছেন। ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার যেকোনও দলের জন্য কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
এমনকি লোয়ার অর্ডারেও রান তোলার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী ব্যাটসম্যান আছেন, ক্রিস জর্ডান, ক্রিস ওকসরা মাঠে বল নষ্ট না করেই বল সীমানা ছাড়া করতে পারেন।পেস বোলার টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট, ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকেই বিশ্বের অন্যতম সেরা জুটি।ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের সাথে নিউজিল্যান্ডের বোলিং লড়াইটাই এই সেমিফাইনালের সুর নির্ধারণ করে দিতে পারে।নিউজিল্যান্ড এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ক্ষুরধার বোলিং লাইনআপগুলোর একটা নিয়ে মাঠে নামছে।পেস বোলার টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট, ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকেই বিশ্বের অন্যতম সেরা জুটি।স্পিনে আছেন মিচেল স্যান্টনার ও ইশ সোধি- এই দুজন ভারতে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের বিরুদ্ধে ৮ ওভার বল করে মাত্র ৩২ রান দিয়েছেন এবং ২ টি উইকেট নিয়েছেন, ভারত এদিন সর্বসাকুল্যে ১১০ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিল।
জিমি নিশাম ডেথ ওভারে দারুণ কার্যকরী। টুইটারে রসবোধের কারণে জনপ্রিয় এই অলরাউন্ডার আধুনিক ক্রিকেটের দারুণ এক চরিত্র হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলছেন।ব্যাট হাতে তিনি ম্যাচ জেতাতে পারেন, বল হাতে কার্যকরী, দারুণ সব ক্যাচও ধরেন নিশাম।তবে শেষ তিনটি ম্যাচ দিনের বেলাই খেলেছে নিউজিল্যান্ড, এটা একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে যেহেতু আবুধাবিতে রাতের খেলায় শিশির একটা বড় ফ্যাক্টর।বর্তমান ওয়ানডে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের সামনে সুযোগ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও বিশ্বকাপ জয়ের।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটি ম্যাচ বাদে ইংল্যান্ড বোলিংয়ে খুব একটা কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েনি। অর্থাত্ কোনও দলই তাদের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেনি।
আবার এমন ব্যাটিংও করেনি যাতে ইংল্যান্ডের বোলারদের বিপদ সামাল দিতে হয়।বিশেষত যখন ইংল্যান্ড বোলার সংকটে ভোগে তখন লিয়াম লিভিংস্টোনের পার্ট টাইম স্পিন সেটা পুষিয়ে দিচ্ছেন।মরগান এই দলটাকে খুব ভালো বোঝেন এবং প্রতিটা ক্রিকেটারের শক্তির জায়গা ও দুর্বলতার জায়গা জানেন।যে কারণে দলের মূল বোলাররা না থাকা সত্ত্বেও ইংল্যান্ড খুব বেশি ভোগেনি।আদিল রশিদ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে পারফর্ম করে যাচ্ছেন।