More
    Homeখবরআতঙ্ক ছড়াচ্ছে গুইলেন ব্যারে সিনড্রোম

    আতঙ্ক ছড়াচ্ছে গুইলেন ব্যারে সিনড্রোম

    আতঙ্ক ছড়াচ্ছে গুইলেন ব্যারে সিনড্রোম (জিবিএস)। একটি সংক্রমণ পরবর্তী স্নায়বিক রোগ নিয়ে চিন্তায় দেশের চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যেই পুণে জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ, কলকাতাতেও সংক্রমণের প্রকোপ পড়েছে। বিরল রোগে এর মধ্যেই এই রাজ্যে দুই কিশোরের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বারাসত এবং জগদ্দলের দুই ছাত্রের মৃত্যু এই রোগে। দেশে এখনও পর্যন্ত ১০০-রও বেশি রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। পুণেতে ১৭ জন রোগী ভেন্টিলেটরে।

     

    ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি নামের একটি ব্যাকটেরিয়াই জিবিএস সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। যা সাধারণত পাকস্থলীতে আক্রমণ করে। এই বিরল অবস্থায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শরীরের স্নায়ুকে আক্রমণ করে।

     

    ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি সংক্রমণ সাধারণত দূষিত খাবার বা জল থেকে হয়। এর প্রধান উৎসগুলি হল, কম রান্না করা বা কাঁচা মুরগি, পাস্তুরিত দুধ এবং অপরিশোধিত জল। কাঁচা এবং রান্না করা খাবারের জন্য একই কাটিং বোর্ড বা বাসন ব্যবহার করে খাবার তৈরি করার সময় ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে ঝুঁকি বাড়বে, যেমন কাঁচা মাংস ধরার পর হাত না ধোয়া বা সংক্রামিত প্রাণীর সংস্পর্শে এলেও রোগাক্রান্ত হতে পারে। এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায় যখন উৎপাদনের এলাকায় যথাযথ স্যানিটেশনের অভাব থাকে। ব্যাকটেরিয়া শরীরে গিয়ে অন্ত্রের আস্তরণকে সংক্রামিত করে, যার ফলে ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, জ্বর এবং বমি বমি ভাব দেখা দেয়।

     

    এইমস (AIIMS) দিল্লির চিকিৎসক ড. প্রিয়াঙ্কা সেহরাওয়াত (এমডি মেডিসিন, ডিএম নিউরোলজি) ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে বলেছেন, “এই রোগের একটি প্রধান কারণ হল ব্যাকটেরিয়া সি জেজুনি। এটি গ্যাস্ট্রোর সমস্যা তৈরি করে। যদিও আরও অনেক কারণ রয়েছে, তবে এটি এমন একটি উৎস, যা নিয়ে আপনাদের সকলের সচেতন হওয়া উচিত। চাইলে এই সতর্কতাগুলি আমরা গ্রহণ করতে পারি। দূষিত খাবার ও জল এড়িয়ে চলুন এবং নিজের প্রতিও যত্ন নিন। রোগ শরীরে দানা বাঁধার ২ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা করা যায়।” চিকিৎসক পনির, ভাত এবং চিজ খাওয়া এড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন কারণ এগুলিতে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির প্রবণতা বেশি। রান্না করা ভাতে ব্যাসিলাস সিরিয়াস থাকতে পারে, যা ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দিলে খাবারে বিষক্রিয়া হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া দূষণ এবং খাদ্যজনিত অসুস্থতার সম্ভাবনা কমাতে এগুলিকে ফ্রিজে রাখা উচিত অথবা রান্নার পরপরেই খেয়ে নেওয়া উচিত।

     

    জিবিএস-এর সাধারণ উপসর্গগুলি হল, পায়ে দুর্বলতা, ঝিঝি ধরা বা অসাড়তা। কিন্তু পা থেকে শুরু হয়ে হাত এবং শরীরের উপরের দিকে অগ্রসর হতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে পক্ষাঘাত হতে পারে। অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হাঁটাচলায় অসুবিধা, মুখ নড়াচড়ায় অসুবিধা (যেমন কথা বলা, চিবানো বা খাবার গেলা) এবং অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন বা রক্তচাপ। কিছু রোগীর শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া বা মূত্রাশয়/অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলাও দেখা দেয়। লক্ষণগুলি প্রায়শই কয়েক ঘণ্টা থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে বেড়ে যায়। আর তখনই অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।

     

    জিবিএস কি সংক্রামক? নানাবতী ম্যাক্স সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, মুম্বই-এর নিউরোলজি বিভাগের ডিরেক্টর ড. প্রদ্যুম্ন ওক বলেছেন, “গুইলেন-ব্যারে সিন্ড্রোম ছোঁয়াচে নয়। এটি একটি অটোইমিউন অবস্থা, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তার নিজের স্নায়ুকে আক্রমণ করে এবং ক্ষতি করে। অনেকগুলি শ্বাসযন্ত্র বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সংক্রমণ জিবিএস ঘটাতে পারে কিন্তু এই অবস্থা একজন মানুষের থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে ছড়াতে পারে না।”

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments