সংগঠনই যেন শেষ কথা বলে। নির্বাচনে জয় পেতে গেলে আসলে সংগঠন মজবুত করাই একমাত্র রাস্তা। ইডি এবং সিবিআই দেখিয়ে বা কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বাস্তবে ভোটে জেতা অসম্ভব। দলীয় কর্মীসভায় গিয়ে পরিষ্কার এই বার্তাই দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। লোকসভা ভোট এবং রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেই ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তারপরই সুকান্ত মজুমদারের এই বার্তায় রীতিমতো জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
এবার তাই দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, লোকসভা পূর্ববর্তী সময়ে দল যে কৌশল নিয়ে চলছিল এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যে বার্তা দিতেন প্রকাশ্যে, সেই রাস্তা থেকেই কি এবার সরে আসার বার্তা দিচ্ছেন সুকান্ত? যদিও তাঁর এই মন্তব্যের পর কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না শাসকদল তৃণমূল। কুণাল ঘোষ বলেন, “একে বলে বিলম্বিত বোধোদয়! এই কথা তো আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম। আসলে রাজ্য বিজেপির ব্যাপারটা হচ্ছে অনেকটা বিরিয়ানির মশলা দিয়ে চচ্চড়ি রান্না করার মতো।”
রবিবার অর্থাৎ ১৫ জুলাই, হুগলির হিন্দমোটর এবং পান্ডুয়াতে দলীয় কর্মীসভায় যান সুকান্ত মজুমদার। দুই জায়গাতেই নেতা এবং কর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা, সব ছেড়ে আগে দলের সাংগঠনিক শক্তি মজবুত করার দিকে নজর দেওয়া জরুরি। হিন্দমোটরের সভা থেকে সুকান্ত জানান, “মোদিজি এসে ম্যাজিক ছড়িয়ে দেবেন আর আমরা শ্রীরামপুর জিতে যাব, এটা কখনও হতে পারে না। অনেকেই বলে যে, দাদা সিবিআইকে বলুন ওকে অ্যারেস্ট করে নিতে। তাহলেই আমরা জিতে যাব। ওসব হবে না! এইভাবে জেতা যায়না।”
সুকান্তর যুক্তি অনুযায়ী, অনুব্রত মণ্ডলও তো জেলে আছেন। তারপরে দাঁড়িয়েও তো বীরভূম দখল করতে পারেনি বিজেপি। লোকসভা ভোটে বীরভূমের দুটি আসনেই হেরেছে তাদের দল। বিজেপি রাজ্য সভাপতির কথায়, “অনুব্রত মণ্ডল তো ছিলেন। আছেন তো জেলে? বীরভূম জিতেছি আমরা?” তারপরেই তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “আপনি পরিশ্রম করে যদি সংগঠন তৈরি করতে পারেন, তা হলেই একমাত্র জিতবেন। আর যদি পরিশ্রম করে সংগঠন তৈরি করতে না পারেন, তাহলে যাকে খুশি অ্যারেস্ট করেও কোনওদিন জিততে পারবেন না।” পান্ডুয়াতে তাঁর বক্তব্য, “ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তবে সেটা বিরিয়ানির মশলার মতো। বিরিয়ানির চাল আর মাংস দলের কর্মীদেরই হতে হবে। তবেই ভালো বিরিয়ানি রান্না হবে।”