ঠিক এক বছর আগের ঘটনা, কালনায় খাদ্য ও পিঠেপুলি উৎসবের দিনে জনপ্রিয় রক ব্যান্ড ফসিল্সের অনুষ্ঠান চলাকালীন চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা ছড়িয়েছিল সেই স্থানে। আহত হয়েছিলেন অনেকেই। এক বছর পর যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি! আলোচনায় সঙ্গীতশিল্পী জোজো মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গীতানুষ্ঠান। সর্বত্র লেখালিখি চলছে, সঙ্গীতশিল্পীর অনুষ্ঠানে নাকি পদপিষ্টও হয়েছেন অনেকে। সত্যিই কি তাই? বিষয়টি স্পষ্ট করতে যোগাযোগ করা হয়েছিল সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গে। সত্যিই কি গত রবিবার রাতে গান শুনতে গিয়ে এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তাঁরা? কী হয়েছিল সেদিন? জোজো জানান এই তথ্যের কোনও সত্যতাই নেই। আহত হলেও পদপিষ্ট হননি কেউই। গায়িকা বলেন, “আমিও শুনেছি পদপিষ্ট হওয়ার খবর। কিন্তু এমনটা কিছুই হয়নি। উদ্যোক্তারাও নিজেদের মতো চেষ্টা করেছেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার। আমার অনুষ্ঠান চলাকালীন মাঠটা পুরোটাই ভরে গিয়েছিল শ্রোতাদের ভিড়ে। মাঠের বাইরেই প্রায় ৩০০-৪০০ মানুষ ছিলেন। আর ভিতরে প্রায় পনেরো হাজারেরও বেশি। ২০ হাজার ছুঁই ছুঁই শ্রোতাদের ভিড়ে নতুন করে শ্রোতাদের জন্য জায়গা না থাকায় উদ্যক্তারা বাইরে বড় পর্দারও ব্যবস্থা করেছিলেন যাতে বাইরে থেকে গান শোনা যায়। বারংবার করে অনুরোধ জানাচ্ছিলেন ফিরে যাওয়ার জন্য। তখনই কিছু মানুষ হয়তো গেটটা ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। তখনই পুলিশ এগিয়ে আসতে কেউ কেউ পালাতে গিয়ে পড়ে গেছেন। কেউ আহত হয়েছেন। কিন্তু আমি যতদূর জানি পদপিষ্টের মতো মর্মান্তিক কিছু ঘটেনি। আমি পরে জেনেছি কয়েকজনকে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং এখন তাঁরা একেবারেই সুস্থ।” একইসঙ্গে সঙ্গীতশিল্পীর অনুষ্ঠানকে ঘিরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর যে অভিযোগ উঠেছে, তাকেও নস্যাৎ করে তিনি বলেন, “শ্রোতাদের মধ্যে উন্মাদনা থাকবেই। কিন্তু মাঠের মধ্যে একজনও বিশৃঙ্খলা ছড়াননি। যা হয়েছে সব মাঠের বাইরেই।” সাধারণত এমন ঘটনায় সবার আগে প্রশ্ন ওঠে উদ্যোক্তাদের ভূমিকা নিয়ে। জোজোও কি সেই দলে? গায়িকা বলেন, “উদ্যোক্তাদের কোনওরকম গাফিলতি আমি দেখিনি। তাঁরা যতটা সম্ভব মানুষকে ঢোকার জায়গা দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও যদি মানুষকে তাঁরা ঢুকতে দিতেন তাহলে গেটের বাইরে বাঁশের ব্যারিকেডটাও ভেঙে যেত। তাঁরা অনেকবার অনুরোধ করেছিলেন। আমিও তাঁদের হয়ে গলা ফাটিয়েছি এবং শ্রোতাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছি ফিরে যেতে। কিন্তু তাঁরা আমায় দেখতে পারছিলেন না বলেই গেট ঠেলে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন।” যদিও অজস্র মানুষের এমন ভালবাসা পেয়ে যে তিনি আপ্লুত, এমনটাও জানাতে ভোলেননি গায়িকা। জোজো বলেন, “আমি প্রায় ১০ বছর কালনাতে অনুষ্ঠান করিনি। খুব ভাল লাগল এটা দেখে যে এত বছর পরও মানুষের মধ্যে উন্মাদনাটা একই রয়েছে।”