১। আপনি ভুল প্রোডাক্ট ইউজ করছেন না তো?
আপনার বান্ধবীর মুখের স্কিনটোন আনইভেন। সে একটা প্রোডাক্ট কিনে ভালো ফল পেয়েছে। আর যায় কোথায়!!! সাথে সাথে দোকান থেকে সেটা নিয়ে এসে প্রবল উৎসাহে মাখা শুরু করলেন… কোন রেজাল্ট পেলেন না… তখন বান্ধবীকে প্রশ্ন করলেন, কই রে আমার ব্রণ তো ঠিক হল না??
কীভাবে হবে? আপনার প্রবলেম এক, আপনার বান্ধবীর প্রবলেম আরেক… যে ক্রিমটি স্কিনের নির্দিষ্ট সমস্যা দূর করার জন্য তৈরি হয়েছে সেটা আপনার সম্পূর্ণ আলাদা সমস্যা কীভাবে দূর করবে? এই ভুল থেকে বাঁচতে হলে, প্রথমে নিজের স্কিনে কী প্রবলেমের জন্য আপনি প্রোডাক্ট চাইছেন সেটা আগে নিশ্চিত হন। তারপর খোঁজ খবর নিন, কোন প্রোডাক্ট এই প্রবলেমের জন্য পারফেক্ট। এতে করে অনেক টাকা গচ্চা দেয়ার হাত থেকে বাচবেন।
২। আপনার স্কিন কি পরিস্কার এমন ডেড সেলস মুক্ত?
ক্রিম/ যেকোনো স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট দুইভাবে কাজ করে, হয়ত এটা আপনার স্কিনের উপরে একটা হালকা আস্তর তৈরি করে স্কিনের আদ্রতা ধরে রাখে, নয়ত বিশেষ কিছু উপাদান, যেগুলো কিনা আমাদের ত্বকের বাইরের লেয়ারের কিছুটা ভেতরে ঢুকে কাজ করতে সক্ষম এমন কিছু ব্যবহার করে।
আর এখানেই সমস্যা, স্কিনে ঢুকতে হবে তো রোমকূপ দিয়ে, কিন্তু আপনি কি জানেন, আপনার রোমকূপ পরিস্কার আছে কিনা? অনেকেই দেখি প্রশ্ন করছে-
‘শীতকালে স্কিন ড্রাই হয়ে গেছে, ক্রিম মাখি, কোন কাজ হয় না… এখন কি করব?’
একটু প্রশ্ন করলেই বোঝা যায় যে ইনি এই তীব্র শীতে মুখ ধোয়া বলতে গেলে বাদ দিয়ে দিয়েছেন। স্ক্রাব করে ত্বকের মরা চামড়ার লেয়ার দূর করা কি, তা হয়ত জানেনই না। ফলাফল, ত্বকের উপর পুরু মরা চামড়ার স্তর, যা ক্রমাগত সাদা সাদা হয়ে উঠছে, আর ইনি মুখে কয়েকটা পানির ঝাপটা দিয়ে সমানে দেশি বিদেশি দামি, কমদামি ক্রিম মেখেই চলেছেন… কিছুই নাকি তার উপরে কাজ করে না!!!
কোন প্রোডাক্ট স্কিনে মাখার আগে তাই একটু কষ্ট করে দেখে নিন আপনার স্কিন পরিস্কার আছে কিনা, আর রেগুলার স্ক্রাব করে স্কিনের ডেড সেলগুলো দূর করা হয় কিনা। নইলে এত শখের দামি ক্রিমের ভালো ভালো উপাদান ত্বকের উপরেই পড়ে থাকবে, পরের বার মুখ ধোয়ার সময় পানির সাথে ড্রেনে চলে যাবে। সাথে সাথে যাবে আপনার টাকা… আর স্কিন আজ যেমন আছে, ২০০০-৩০০০ টাকার ক্রিম মাখার পড়ও তেমনই থাকবে।
৩। আপনি কখন স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করছেন?
স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করার সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে মুখ ধোয়ার ঠিক পড় পড়। তাই প্রতিবার ক্রিম দেয়ার আগে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন। কিন্তু তারপর পানি পুরোপুরি শুকিয়ে যেতে দেবেন না যেন! মুখ একটু ডাম্প/ ভেজা ভেজা থাকতে থাকতেই ক্রিম মাখুন। এতে করে মুখ থেকে পানি উড়ে যাওয়ার আগেই আপনার ময়েশ্চারাইজার স্কিনের উপর লেয়ার তৈরি করে পানিকে আটকাবে। আর আপনার স্কিন থাকবে সারাদিন সতেজ এবং আদ্র। মুখ ধোয়ার ২ ঘণ্টা পর ক্রিম মাখার কথা মনে পড়ল, আর ওমনি শুকনো খটখটে মুখে একগাদা ক্রিম স্কিনে মাখলেন, কোন লাভই হল না। কারণ যে পানিটুকুকে আটকানোর জন্য ক্রিম বানানো হয়েছে সে বাবাজি মুখ ধোয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে ত্বক থেকে উবে গেছেন। একি কথা বডি লোশন/ অয়েল/ বাটারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। স্কিন ভেজা থাকতে থাকতেই ময়েশ্চারাইজার লাগান।
৪। আপনার স্কিন টাই চেঞ্জ হয়ে যায়নি তো?
গত ১০ বছর ধরে একি ক্রিম মাখছেন? চিন্তা করছেন স্কিন কেন দিন দিন ডাল হচ্ছে? ১০ বছর আগে আপনার স্কিন হয়ত অয়েলি ছিল, ব্রণের সমস্যা ছিল। তখন একটা মনের মত প্রোডাক্ট পেয়ে গিয়েছিলেন তাই অনেক দিন ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এখন হয়ত আপনার স্কিন অনেক ড্রাই, মুখে বলিরেখা হচ্ছে, তিল/ মেছতা হচ্ছে… আপনার প্রিয় ক্রিমের এখন আর আপনার স্কিনের প্রবলেম সল্ভ করার ক্ষমতা নেই। সুতরাং, আবার বলছি নিজের সমস্যা বুঝে প্রোডাক্ট ইউজ করুন।
এত গেল ১০ বছরের কথা, আমাদের স্কিন তো গরমে একরকম থাকে আবার বর্ষায় একরকম, আবার শীতে অন্য রকম। সুতরাং, সব সিজনে একি ক্রিম ইউজ করে কীভাবে আপনি আশা করেন যে আপনার স্কিন ভালো থাকবে? স্কিন কখন কী চায় তা বুঝুন। এটা আপনার ত্বক, আপনার চেয়ে ভালো তো আর অন্য লোক বুঝবে না।