আর জি কর কান্ড নিয়ে সরগরম হয়ে রয়েছে রাজ্য তথা দেশ। জুনিয়র ডাক্তাররা এখনও লালবাজার ঘিরে প্রতিবাদ চালাচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে নাট্যক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার’ ফিরিয়ে দিতে চান প্রবীণ নাট্যকার চন্দন সেন। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে এই প্রথম পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন কোনও সরকারি পুরস্কার প্রাপক। এদিকে আবার এও শোনা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অকাদেমি পুরস্কার ফেরত পাঠাচ্ছেন অভিনেতা বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রবিবার কোন্নগর শহর ও নবগ্রাম মহিলা তৃণমূলের উদ্যোগে ধর্নামঞ্চে যোগ দেন তৃণমূলের বিধায়ক তথা অভিনেতা কাঞ্চন। সেখানে ধর্ষকদের ফাঁসি দাবি করার পরক্ষণেই আন্দোলনকারী ডাক্তার কর্মবিরতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “অনেক সরকারি কর্মচারি কর্মবিরতিতে রয়েছেন। তারা সরকারের থেকে বেতন নিচ্ছেন তো নাকি? বোনাস নেবেন তো, না সেটা প্রত্যাহার করবেন?” এর পরই আবার তিনি বলেন, “তাঁরা যাঁরা সরকারি পুরস্কার ইত্যাদি নিয়েছেন তাঁরা ফেরত দেবেন? বলুন ফেরত দিয়ে দিচ্ছি।” তাঁর এই মন্তব্যের পর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি।
প্রতিবাদীদের খোঁচা দিয়ে পুরস্কার ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কাঞ্চন মল্লিক। তৃণমূলের বিধায়ক হলেও কাঞ্চন একজন নাট্যকর্মী। রবিবার বিতর্কিত মন্তব্য করার পর সোমবার তিনি ক্ষমা চাইলেও তাতে অপমানিত বোধ করছেন বর্ষীয়ান নাট্যকার চন্দন সেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি ঘোষণা করেন ২০১৭ সালে রাজ্য সরকারের দেওয়া নাট্যক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার’ ফিরিয়ে দেবেন।
নাট্যকার দাবি করেন, যে ঘটনা রাজ্যে ঘটেছে তা নিন্দনীয়। তবে প্রাথমিক ভাবে পুরস্কার ফেরানোর কথা তিনি ভাবেননি। কিন্তু যে ভাবে শাসকদলের বিধায়ক হয়ে কাঞ্চন এমন বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তাতেই তিনি মনে করছেন পুরস্কার রাখার অধিকার তাঁর আর নেই। চন্দন বলেন, “চিকিৎসকেরা যে আন্দোলন করছেন, আমি তার শরিক। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আমি পদযাত্রায় শামিল হয়েছি। কারণ, আমার বাবা ৪০ বছর সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। আমি এই যন্ত্রণার শরিক।” কাঞ্চন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একজন বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক, যাঁকে আমি নাট্যকর্মী হিসাবে খুব ভাল মতো চিনতাম, তাঁর এমন পদোন্নতি হয়েছে জানতাম না। আমি কোনও দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কথা বলতে চাই না। কিন্তু আমি আশা করেছিলাম, কাঞ্চনের এমন মন্তব্য তাঁর দল প্রত্যাহার করে নিতে বলবে। ১২ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলাম। তেমন কিছুই ঘটেনি। তাই সোমবার রাতে সিদ্ধান্ত নিই, পুরস্কার ফিরিয়ে দেব।”