শরতের আকাশে আগমনীর সুর, আর কিছু দিনের অপেক্ষায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। আর মাত্র কিছুদিনের অপেক্ষা মর্তে আসবেন উমা। প্রতিবছর ঢাকের তালে, ধুনুচি নাচে মেতে ওঠে আপামর বাঙালি কিন্তু এই বছরের সেই ছবি একটু হলেও অন্যরকম। উমা আসেন প্রতিবার কিন্তু ঘরের উমার সঙ্গে ঘটেছে যে নৃশংস ঘটনা, তা ভুলতে পারছে না কেউই। বারবার মনে পড়ছে সেই ৯ ই আগস্ট এবং ১৪ই আগস্টের রাত। আর ফিরে আসবে না তিলোত্তমা, তার পরিবারও যেমন বাকরুদ্ধ, একইভাবে বাকরুদ্ধ তার বিচারের দাবিতে কুমোরটুলিও। ‘মা কে মর্তে আনা প্রয়োজন, মা এলে তবেই অসুর বধ হবে’ এমনি বক্তব্য কুমোরটুলির এক মৃৎশিল্পীর।
মহালয়ার আগে কুমোরটুলিতে সামান্য লোকজনের আনাগোনা দেখা গেলেও তুলনামূলকভাবে তা অন্য বছরের থেকে অনেকটাই কম। কুমোরটুলি মৃৎশিল্পীদের একাংশের মন বসছেনা কাজে। তারা বলছেন, ‘নিজের হাতে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করার সময় বারবার আমাদের মনে ধ্বনিত হচ্ছে একটাই স্বর জাস্টিস ফর আর জি কর’। মহালয়া আসতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে শুরু হবে মাতৃ পক্ষ। আর এই মাতৃপক্ষের সূচনাতেই উমার কাছে কুমোরটুলি মৃৎশিল্পীর একাংশের প্রার্থনা ‘বিচার পাক তিলোত্তমা’। তাও একরাশ বুকে কষ্ট জমা রেখে তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে কাজে মন দিচ্ছেন শেষ লগ্নে। যেহেতু দুর্গা প্রতিমা গুলি পাড়ি দেবেন কলকাতার এগলি থেকে সেগলি, বনেদি বাড়ি থেকে, কোন বড় বড় ক্লাবগুলিতে তাই বুকে চাপা কষ্ট নিয়েও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা।
বাংলার আকাশ জুড়ে শরতের যে মেঘ প্রতিবছর লক্ষ্য করা যায়, এই সময় এই শরতের মেঘ ও বোধহয় বাংলার কুজ্ঝটিকাময় অন্ধকারকে দূর করতে পারছে না কোনভাবেই। তাই কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা মনে করছে উমা আসুক মর্তে বিচার পাক তিলোত্তমা। এই বছর তারাও এটাই মনে করছেন। অন্যদিকে সারা বাঙালির উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় উৎসবে ফিরে এলেও মন্ডপে মন্ডপে আমরা কখনই ভুলতে পারবো না তিলোত্তমাকে। তাই পূজোমণ্ডপ গুলিতেও একটু সময় যেন বেছে নেওয়া হয় তিলোত্তমার জন্য। কারণ তিলোত্তমাও এই বাংলারই একজন উমা ছিল। এখন মহালয়া আসতে আর মাত্র দুই দিন পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে শুরু হবে মাতৃ পক্ষের। আর এই মাতৃপক্ষের সূচনাতেই বিচার পাক তিলোত্তমা। উমার কাছে এই প্রার্থনায় বর্তমানে তুলছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের একাংশ।