মঙ্গলবার রাতে এক যুব তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ার অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছাড়াল কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি ভাতজাংলা পঞ্চায়েত এলাকায়। ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। জেলার পুলিশ সুপার বিশ্বজিত্ ঘোষ বলেন, ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। একটি বাইক বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ভাতজাংলা পঞ্চায়েত এলাকার যুব তৃণমূল সভাপতি হীরক সাহা ওরফে হংস দলের স্থানীয় একটি নির্বাচনী কার্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় বাড়ির গেটে ঢোকার মুখে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ জানান তিনি। থানার খবর দিতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছায়। তাঁর বাড়ির কাছ থেকে একটি বাইক উদ্ধার হয়।
হীরকবাবু বলেন, প্রতিদিন বকুলতলা পাড়া হয়ে বাড়িতে ঢুকি। কিন্ত গতকাল পীরতোলা দিয়ে বাড়িতে ঢোকার মুখেই আচমকা গুলির শব্দ শুনতে পাই। আমাকে লক্ষ্য করেই বকুলতলা মোড়ের দিক থেকে গুলিটি ছোড়া হয়েছিল। দ্রুত বাড়ির পাঁচিলের ভিতরে ঢুকে পড়ায়
বরাতজোরে রক্ষা পেয়েছি। দুষ্কৃতীরা আগে থেকে আমার বাড়ি ফেরার রাস্তা জানত। তাই তিন-চারজন দোকানের অন্ধকারে লুকিয়েছিল। আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনাছিল ওদের। ওই নেতার স্ত্রী তথা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা মৌমিতা বিশ্বাস সাহা বলেন, ও মূল রাস্তা থেকে বাড়ির দিকে আসার সময় বাইকের আওয়াজ শুনে সদর দরজা খুলতে যাই। দরজার কাছে পৌঁছতেই গুলির শব্দ শুনি। সঙ্গে সঙ্গে সদর দরজা খুলে ওকে বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে নিই। কোতোয়ালি থানায় ফোন করা হলে পুলিশ আসে। বুধবার সকাল থেকেই সিভিক ভলেন্টিয়ার রয়েছে বাড়িতে। খবর পেয়ে রাতেই দলীয় কর্মীরা বাড়িতে এসেছিলেন বলেও তিনি জানান। এই গুলি চালানোর ঘটনায় যুব তৃণমূল নেতা ও তার স্ত্রীর দাবি, স্থানীয় গ্রাম সদস্য তথা সদ্য তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানো কৌশিক ঘোষ ও তাঁর দলবলের হাত রয়েছে। যদিও কৌশিকবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানিনা। রাতে যে সময়ে গুলি চালানোর কথা বলা হচ্ছে সেই সময় আমি বাড়িতেই ছিলাম। প্রয়োজনে আমার বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে পারে পুলিশ। গোটা ঘটনাই মিথ্যা এবং সাজান বলে আমার মনে হয়।কারণ, মঙ্গলবার ভাতজাংলা পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনা হয়েছে। আমাদের বদনাম করতে এসব করা হচ্ছে। এব্যাপারে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ভাতজাংলা শান্তিপূর্ণ জায়গা। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি আবারও অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। অশান্তি ছড়ানোই ওদের সংস্কৃতি। তার উদাহরণ গতকালের গুলি চালানোর ঘটনা। নির্বাচনে সাধারণ মানুষ জবাব দেবে। পাল্টা বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক রঞ্জন অধিকারী বলেন, এটা তৃণমূলের চক্রান্ত।