বাঙালির প্রাণের উৎসব কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো। শারদীয় দুর্গাপূজার ধুমকেটে পর আসে এই উৎসব। কিন্তু এই পূজার ইতিহাস ও পদ্ধতি সম্পর্কে সকলেই কি জানেন? আজকে আমরা আপনাদের জন্য তুলে ধরছি কোজাগরী লক্ষ্মীপূজোর ইতিহাস ও পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজোর ইতিহাস
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজোর উৎপত্তি সম্পর্কে একাধিক মত রয়েছে। একটি প্রচলিত মত অনুযায়ী, এই পূজোর উৎপত্তি হয়েছিল কৃষি সমাজে। শারদীয় আষাঢ়ে ফসল কাটা শেষ হয়ে গেলে কৃষকরা দেবী লক্ষ্মীকে ধন্যবাদ জানাতেন এবং নতুন ফসলের জন্য প্রার্থনা করতেন। ধীরে ধীরে এই রীতি পূজার আকার ধারণ করে।
আবার অন্য একটি মতে, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজোর সঙ্গে রামায়ণের একটা যোগসূত্র রয়েছে। রামচন্দ্র যখন চৌদ্দ বছর বনবাস শেষ করে আয়োধ্যা ফিরে এসেছিলেন, তখন তিনি লক্ষ্মী দেবীর পূজা করেছিলেন। সেই থেকে এই পূজার প্রচলন শুরু হয়।
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার পদ্ধতি
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার পদ্ধতি বাঙালির ঘরে ঘরে ভিন্ন ভিন্ন হলেও মূলত কয়েকটি সাধারণ রীতি রয়েছে।
* **মূর্তি স্থাপন:** সাধারণত মাটি বা ধাতু দিয়ে তৈরি লক্ষ্মী দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয়।
* **পূজার সময়:** কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো সাধারণত কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাতে হয়।
* **পূজার উপকরণ:** পূজার জন্য নারকেল, ফুল, ধূপ, দীপ, মিষ্টি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
* **প্রদীপ:** বাড়ির আঙ্গিনা, বারান্দা সহ সব জায়গায় প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়িটিকে আলোকিত করা হয়।
* **কোজাগরী:** রাত জেগে দেবীর আরাধনা করা হয়।
* **ভোগ:** বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, ফলমূল দিয়ে দেবীর ভোগ দেওয়া হয়।
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজোর তাৎপর্য
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এই পূজোর মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয় এবং সকলে মিলে দেবীর আরাধনা করে।
**সারসংক্ষেপ:** কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো বাঙালির জীবনে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এই পূজোর ইতিহাস যতই প্রাচীন হোক না কেন, আজও এই পূজোর জনপ্রিয়তা কমেনি।