More
    Homeখবরকোজাগরী লক্ষ্মী পূজায় কলার ভেলা: এক প্রাচীন রীতির গভীর অর্থ

    কোজাগরী লক্ষ্মী পূজায় কলার ভেলা: এক প্রাচীন রীতির গভীর অর্থ

    কোজাগরী লক্ষ্মী পূজোর সময় কলার ভেলা দেওয়ার রীতি পশ্চিমবঙ্গের অনেক অঞ্চলেই দেখা যায়। কিন্তু এই রীতির পেছনে আছে এক গভীর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য।

     

    **কলাগাছ: শস্যের দেবী লক্ষ্মীর প্রতীক**

     

    লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কলাগাছকে বিষ্ণুর অবতার বলে মনে করা হয়। ফলবতী কলাগাছকে বিষ্ণুপ্রিয়া বলেও অভিহিত করা হয়। তাই কলাগাছকেই বিষ্ণুপ্রিয়া লক্ষ্মী হিসাবে পূজো করা হয়। ফলবতী কলাগাছ শস্যের প্রতীক। তাই শস্যলক্ষ্মীর ধারণাও এর মধ্যে নিহিত।

     

    **কলার ভেলা: বাণিজ্যের প্রতীক**

     

    লক্ষ্মী কেবল শস্যের দেবী নন, তিনি বাণিজ্য ও ধনসম্পদেরও দেবী। তাই বাণিজ্য তরী সাজিয়ে আরাধনা করা হয় বাণিজ্য লক্ষ্মীর। কলার ভেলা বাণিজ্যের প্রতীক হিসাবে এই পূজোতে স্থান পায়।

     

    **পূর্ববঙ্গীয় রীতির প্রভাব**

     

    কাটোয়ার পানুহাট এলাকায় এই রীতির প্রচলন বেশি দেখা যায়। এখানকার বহু বাড়িতে পূর্ববঙ্গীয় বাসিন্দারা বসবাস করেন। তাদের পূর্বপুরুষরা এই রীতি অনুসরণ করতেন এবং তা পরবর্তী প্রজন্মেও চলে আসছে।

     

    **কলাবউ লক্ষ্মী**

     

    কলাগাছকে বউ সাজিয়ে পূজো করার রীতিও অনেক বাড়িতে দেখা যায়। এই কলাবউকে লক্ষ্মীর রূপে পূজো করা হয়। নবপত্রিকার মতো ন’টি গাছ ব্যবহার করে কলাবউ তৈরি করা হয় এবং পূজোও নবপত্রিকার মতো করেই হয়।

     

    **এক প্রাচীন রীতির সংরক্ষণ**

     

    এই রীতি পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আজকাল যখন আধুনিক জীবনযাত্রার ছোঁয়া সর্বত্র, তখনও এই রীতির অস্তিত্ব টিকে থাকা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই রীতির মাধ্যমে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারি।

     

    **বিশেষজ্ঞ মত**

     

    কাটোয়ার বাসিন্দা স্বপন ঠাকুরের মতে, “এটা হল শস্য লক্ষ্মীর পুজো। পূর্ববঙ্গের মানুষ কৃষিতে উন্নতি চেয়ে সম্পদের দেবীর আরাধনা এভাবে করতেন বলেই আমার মনে হয়। আর কলাগাছ ফলের প্রতীক। সে দিক থেকে ফল লাভের আশায় কলাগাছ রূপী লক্ষ্মীদেবীর পুজো করা হয় বলেই মনে হয়।”

     

    কোজাগরী লক্ষ্মী পূজায় কলার ভেলা দেওয়ার রীতি শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির একটি গভীর মূল। এই রীতির মাধ্যমে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের কৃষিপ্রধান জীবন ও প্রকৃতির প্রতি ভক্তি সম্পর্কে জানতে পারি।

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments