অর্গানিক
যখন আপনার প্রোডাক্টটি সম্পূর্ণ ন্যাচারাল ওয়েতে কালেক্ট করা হয়, এবং চাষ করা হয়। এবং চাষের সময় ও কোন রাসায়নিক কীটনাশক অথবা সার ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে গাছ লাগান থেকে শুরু করে ফল তোলা পর্যন্ত প্রত্যেকটি পর্যায়ের কাজ করা হয় তখন সেই উপাদানটিকে অর্গানিক উপাদান বলা যায়। আর এমন অর্গানিকউপাদান দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি প্রোডাক্ট টিকে অর্গানিকবলা যায়।
ভার্জিন/ এক্সট্রা ভার্জিন-
এই ট্যাগটি সাধারনত কোন তেলের প্রস্তুতপ্রক্রিয়াকে বোঝায়। তেল তৈরি করার কাজে যত বেশি তাপ ব্যবহার করা হয় তেলের গুনাগুন ততই নষ্ট হয়।ভার্জিন তেল বলতে বোঝানো হয় এই তেল তৈরিতে মিনিমাম তাপ ব্যবহার করা হয়েছে, আর এক্সট্রা ভার্জিন মানে- হয়ত কোন তাপ ব্যবহার করা হয়ইনি। তাপ বিহীন পদ্ধতিতে/ কোল্ড প্রেস করে তেল বের করা হয়েছে। আর এটাই বেস্ট কোয়ালিটির তেল!!!
অনেককেই দেখি বাজার থেকে খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে স্কিনে মাখার তেল কিনে নিয়ে আসেন। যাতে স্পষ্ট করে লেখা থাকে ‘refined / contains mineral oils’ যেটা তারা পড়েই দেখেন না। এমন পাঠকদের আমরা বলি – আচ্ছা আপনার কষ্ট করে পড়ার দরকার নেই। এরপর থেকে শুধু বাজারে যে ভার্জিন/ এক্সট্রা ভার্জিন লেখা খাওয়ার তেল পাওয়া যায় সেটা কিনবেন, অ্যাট লিস্ট আপনার টাকাগুলো বাঁচবে!! ‘
তখন খুব অদ্ভুত একটা জবাব পাই-
খাওয়ার জিনিস কী স্কিনে, চুলে দেয়া যায়??
আপনাদের জন্য একটাই কথা- সবচেয়ে ভালো রূপচর্চা সেটা দিয়েই করা যায় যেটা আপনি নির্দ্বিধায় খেয়ে ফেলতে পারবেন। আর এই নকল আর ভেজালের দুনিয়ায় স্কিনের তেল, চুলের তেল এসব ভেজালে না গিয়ে একবারে খাওয়ার জন্য তৈরি ভার্জিন তেলটাই কিনে নিয়ে আসবেন।
বাংলাদেশে ঘানি ভাঙ্গা ভার্জিন এবং আনরিফাইনড তেল যোগার করাটা খুব মুশকিল। স্পেসালি নারিকেল তেল, যেটা আমরা সবাই এত ব্যবহার করি। আজকে আপনাদের আমার অভিজ্ঞতা থেকে অপরিশোধিত, অর্গানিক, ঘানি ভাঙ্গা নারিকেল তেল চেনার উপায়, এর গুনাগুন এবং বাবহারের কয়েকটি উপায় জানাবো।
কীভাবে চিনবেন? অরগানিক, ভার্জিন ১০০% ন্যাচারাল ঘানি ভাঙ্গা নারিকেল তেল?
– ব্যাক্তিগত এক্সপেরিএন্স থেকে বলছি, আমি আজ পর্যন্ত বাজারের কোন শপ থেকে কেনা নারিকেল তেল থেকে আসল ঘানি ভাঙ্গা তেলের মত কড়া নারিকেলের ঘ্রান পাইনি… বাজারের সব তেল থেকেই কেমন যেন পেট্রোলিয়াম জেলির মত ঘ্রান আসে… আসল তেল যখন প্রথম ঘানি থেকে নামান হয়, এটা থেকে একদম নারিকেলের বরফির মত একটা ঘ্রান বের হয়। অনেক দিন ধরে বোতলে ভরে রাখতে রাখতে এই ঘ্রান তা একটু মিইয়ে যায়।
– রঙের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, বোতলে রাখা অবস্থায় নারিকেলের রঙ হয় একদম সোনালি। আর বড় ঘানিতে নারিকেলের খলাসহ পিষে ফেলে তেল বের করা হয়। এবং যেহেতু কোন রাসায়নিক পদ্ধতিতে ফিল্টার না করে একদম ন্যাচারালভাবে ছেকে তেল তৈরি করা হয় তাই তেলের ভিতরে নারিকেলের খোলার হালকা কিছু গুড়ো থাকে।
সংরক্ষণ
অর্গানিক তাজা নারিকেল থেকে তৈরি ঘানি ভাঙ্গা তেল কৃত্রিম উপায়ে পরিশোধন করা হয় না বলে এতে হালকা পরিমান পানি রয়ে যায়। সম্পূর্ণ তাপবিহীনভাবে এই তেল তৈরি হয় বলে তেল ফুটিয়ে পানি দূর করার প্রশ্নই ওঠে না। এতে তেলের গুনাগুন একেবারেই নষ্ট হওয়ার চান্স থাকে।
একটু পানি থাকার কারণে এই তেল ব্যবহার শুরু করার এক বছরের মধ্যেই শেষ করে ফেলাটা ভালো। কারণ তাজা তেলের গুনাগুন এর মধ্যেই অনেকটা শেষ হয়ে যায়। আর আমি মাঝে মাঝেই আমার ঘানি ভাঙ্গা তেলের বোতলগুলো একটু রোদে দেই। ঘরে বানান আচার যেমন রোদে দিলে তাজা থাকে, গন্ধ হয় না। ঠিক তেমন।
এটুকু পড়েই আপনি নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, আপনার কেনা তেলটার সাথে ঘানি ভাঙ্গা ভার্জিন তেলের তফাৎ আসলে কতটুকু। সুতরাং চিন্তা করে দেখুন, আপনি কতো কষ্ট করেই না টিপস পড়ে পড়ে তেল দিয়ে চুল আর স্কিনের কেয়ার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু গোড়াতেই যখন গলদ থাকে তখন আসলেই কি কোন ফল পাবেন?