তৃণমূল ছাড়লেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। দলের টিকিটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি কেন্দ্র থেকে ২ বার বিধায়ক হন তিনি। সোমবার দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে চিঠি দিয়ে দলের সমস্ত পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তিনি।
এদিন দলত্যাগ করে দেবশ্রী লিখেছেন, ‘তৃণমূল তাঁকে ব্যাবহার করেছে। কিন্তু কখনও উপযুক্ত মর্যাদা দেয়নি।’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, রাজনীতি ছেড়ে অভিনয়ে ফিরতে চান তিনি।
২০১১ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি কেন্দ্র থেকে বর্ষীয়ান বাম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে হারিয়ে সবাইকে চমকে দেন দেবশ্রী। এর পর দলের জেলা সম্পাদক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিশেষ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে বলে শোনা যায়। ২০১৬ সালেও কান্তিবাবুকে হারিয়ে আসনটি ধরে রাখেন তিনি। ২০১৯-এর ১৪ অগাস্ট শোভন চট্টোপাধ্যায় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপিতে যোগদান করতে গেলে দিল্লিতে বিজেপির প্রধান কার্যালয়ে হাজির হন দেবশ্রীও। দেবশ্রীকে দেখে বিজেপিতে যোগদান করতে বেঁকে বসেন শোভন – বৈশাখী। পরে দেবশ্রীকে বিজেপিতে নেওয়া হবে না এই শর্তে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেন তাঁরা।
গত কয়েক বছরে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে দেবশ্রী রায়ের বিরুদ্ধে উঠেছে একাধিক অভিযোগ। যার মধ্যে সব থেকে গুরুতর টোটো কেলেঙ্কারি। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, টোটো দেওয়ার নামে স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা নিলেও সেই টোটো দিতে পারেননি দেবশ্রী। সঙ্গে নিজের বিধানসভা এলাকায় তাঁকে দেখা যায় না বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলকর্মীরাই।
সম্প্রতি রায়দিঘি থেকে তিনি দাঁড়াতে চান না বলে দলকে জানিয়েছিলেন দেবশ্রী। তবে তিনি যে এবার টিকিট পাবেন না তা মোটামুটি ঠিকই ছিল। তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা প্রকাশিত হলে দেখা যায় তাতে ঠাঁই হয়নি রুপোলি পর্দা কাঁপানো এই অভিনেত্রীর।
তবে দেবশ্রীর তৃণমূলে ইস্তফায় অন্য সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। প্রার্থীতালিকায় নাম না থাকায় রবিবারই বিজেপি থেকে অব্যহতি চেয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। শোভনবাবুর আপত্তিতেই এতদিন বিজেপিতে যোগদান করা হয়নি দেবশ্রীর। শোভনবাবুর দলত্যাগের পরদিনই তৃণমূলে ইস্তফা দিলেন দেবশ্রী। তবে কি গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে চলেছেন তিনি। দেবশ্রী রায় যদিও জানিয়েছেন, আপাতত অভিনয়ে মন দিতে চান তিনি।