দুর্গাপূজার সময় সকলেই মাতৃশক্তির আরাধনায় মগ্ন। কিন্তু এই উৎসবকে ঘিরে একটি প্রশ্ন বহুকাল ধরে জনমনে কৌতূহল জাগিয়ে রেখেছে – দুর্গাপূজা আসলে রামের না রাবণের?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদেরকে পৌরাণিক কাহিনির দিকে ফিরে যেতে হবে। রামায়ণ মহাকাব্যে রাম এবং রাবণের যুদ্ধের সময় রামের অকালবোধনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রাম যখন রাবণকে পরাজিত করতে অসমর্থ হন তখন তিনি দুর্গাকে আহ্বান করেছিলেন। এই অকালবোধনকে কেন্দ্র করেই এই বিতর্কের সূত্রপাত।
কী বলে পুরাণ?
পুরাণ অনুসারে, রামের অকালবোধনের পুরোহিত হিসাবে রাবণকেই নির্বাচিত করা হয়েছিল। এই ঘটনার ভিত্তিতে অনেকেই দাবি করেন যে দুর্গাপূজা আসলে রাবণের সাথে যুক্ত। তবে অন্য এক দলের মতে, দুর্গা মহামায়া, তিনি সকলেরই মা। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির সাথে তাঁকে যুক্ত করা যায় না।
বিশেষজ্ঞদের মত
ইতিহাসবিদ এবং ধর্মতত্ত্ববিদদের মতে, এই প্রশ্নের কোনো একক উত্তর নেই। পুরাণের বিভিন্ন সংস্করণে এই ঘটনার বর্ণনা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মের একটি প্রাচীন তীর্থযাত্রা এবং এর মূল উদ্দেশ্য হল মাতৃশক্তির আরাধনা। এই উৎসবের সাথে যুক্ত বিভিন্ন কাহিনী এবং কিংবদন্তি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে।
সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি
সাধারণ মানুষের কাছে দুর্গাপূজা হল একটি উৎসব যা আনন্দ, ভক্তি এবং পারিবারিক সম্পর্ককে মজবুত করে। তারা এই উৎসবকে রাম বা রাবণের সাথে যুক্ত করার চেয়ে মাতৃশক্তির আরাধনার একটি উপলক্ষ হিসেবে দেখতে পছন্দ করেন।
দুর্গাপূজা রামের না রাবণের এই প্রশ্নের কোনো নির্দিষ্ট উত্তর না থাকলেও এই বিতর্ক পুরাণ, ইতিহাস এবং ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করে। সবশেষে, দুর্গাপূজা হল একটি সাংস্কৃতিক উৎসব যা ভারতীয় সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই উৎসবের মূল চেতনা হল মাতৃশক্তির আরাধনা এবং সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে একতা স্থাপন করা।