১৯৬৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো আমজনতার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল মাঝেরহাট সেতু। বেহালা থেকে কলকাতার যাতায়াত যাতে সহজে করা যায়, সেই কারণে মাঝেরহাট রেল স্টেশনের একদম উপরেই এই সেতু তৈরি করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো হচ্ছিল না, এমনটা অভিযোগ থাকলেও বয়স বাড়ছিল প্রতিনিয়ত। ফলে ফাটল প্রত্যক্ষ করা বা চোখের সামনে চাঙড় খসে পড়া, সাধারণ ঘটনা হয়ে গিয়েছিল নিত্যযাত্রীদের জন্য।
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট সেতু। সেই দু:স্বপ্ন আজ অতীত। প্রায় ২ বছর তিনমাস পর নতুন রূপে, নতুন নামে খুলে গেল শহরের অন্যতম লাইফলাইন মাঝেরহাট সেতু বা মাঝেরহাট ব্রিজ। নয়া প্রযুক্তি, নতুন রূপ ও আরও চওড়া উন্নত পরিবহণ ক্ষমতা নিয়ে খুলে গেল মাঝেরহাট ব্রিজ। আগের চেয়ে অনেক বেশি ভার বহনে সক্ষম। আগের চেয়ে আরও দ্রুতগতিতে ছুটছে গাড়ি। ভার বহন করতে না পেরে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা পুরোপুরি উধাও বলে দাবি পূর্ত দফতরের।
ভেঙে পড়ার কিছুদিন পরেই যুদ্ধকালীন তত্পরতায় নতুন সেতু তৈরির দায়িত্ব পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দেয় রাজ্য সরকার। ঠিক করা হয়, ২৫০ কোটি টাকা খরচ করে ২০২০ সালের পুজোর আগেই সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হবে নবনির্মিত মাঝেরহাট ব্রিজ। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ধাঁচে এই সেতুও তৈরি হবে বলে জানা যায়। তবে লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ থাকে দীর্ঘদিন। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রিজের কাজ শেষ করা যায়নি। তাছাড়াও রাজ্য সরকার ও রেলওয়ের মধ্যে বনিবনার অভাবে একাধিকবার থমকে যায় কাজের গতি।
অনেক ঝড়-ঝাপ্টা পেরিয়ে অবশেষে আজ বিকেলে ৫টায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে নতুন মাঝেরহাট সেতু চালু হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী নতুন সেতুর নাম রেখেছেন ‘জয় হিন্দ ব্রিজ’। সেতুটি লম্বায় প্রায় ৬৫০ মিটার। সেতুটি ৩৮৫ টন পর্যন্ত ভার বহন করতে সক্ষম। নতুন মাঝেরহাট সেতু চালু হওয়ার ফলে নিত্যদিনের যাতায়াত অনেকটাই সুবিধাজনক হবে বেহালা তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনার নিত্যযাত্রীদের জন্য।