আজ হায়দরবাদ শহরের ১৫০টি পুরসভা আসনে ভোটগণনা শুরু হয়েছে। কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস) এবং আসাদউদ্দিন ওয়াইসির অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-কে টপকে গণনায় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৮২টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। অর্থাত্ ‘ম্যাজিক সংখ্যা’ ৭৬ ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে তারা। সেই তুলনায় টিআরএস এগিয়ে মাত্র ৩১টি ওয়ার্ডে। এমআইএম এগিয়ে রয়েছে মাত্র ১৬টিতে। ১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস।
হায়দরাবাদ পুরসভা দখল করতে এ বার ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি। স্থানীয় নেতাদের উপর ভরসা না করে উত্তরপ্রদেশ থেকে যোগী আদিত্যনাথকে তারকা প্রচারক হিসেবে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল তারা। সেখানে গিয়ে স্বভাবসিদ্ধ ঢংয়ে হিন্দুত্বের জিগির তুলেছিলেন তিনি। ‘ওয়াইসির গড়’ বলে পরিচিত ওল্ড সিটির লাল দরওয়াজায় দাঁড়িয়ে নিজামের শহরের নাম বদলে ‘ভাগ্যনগর’ করার দাবিও তুলেছিলেন। শেষবেলার প্রচারে গিয়ে ভাগ্যলক্ষ্মী মন্দিরে পুজো দিয়ে সেখানে বিজেপির ‘ভাগ্যপ্রসন্ন’ করার রাস্তা আরও প্রশস্ত করে তোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাতে অন্য মাত্রা যোগ করেন বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য। দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর এই সাংসদ সেখান গিয়ে বলেন, ”ওয়াইসি মহম্মদ আলি জিন্নার নতুন অবতার। টিআরএস এবং এমআইএম একই মুদ্রার দু’পিঠ। কেসিআর হায়দরাবাদকে ইস্তানবুল করে তুলতে চান। ১০০ শতাংশ মুসলিম দেশ তুরস্ক। সে দেশের প্রেসিডেন্ট আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। এমআইএম ভারতের হায়দরাবাদকে পাকিস্তানের হায়দরাবাদ করতে চায়। আমরা হায়দরাবাদকে ভাগ্যনগর বানাব। ইস্তানবুল নয়।”
শুক্রবার সকালে প্রাথমিক গণনার ফল সামনে আসার পরই বিজেপির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ টুইটারে লেখেন, ‘ওয়েল ডান ভাগ্যনগর। দারুণ ভাবে এগোচ্ছে বিজেপির তেলঙ্গানা টিম। দাগ কাটতে পেরেছো তোমরা’। তেলঙ্গানার বিজেপি সাংসদ ডি অরবিন্দ বলেন, ”তেলঙ্গানায় পরিবর্তন শুরু হয়ে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচন দেখেছেন। দুব্বাকা উপনির্বাচনও দেখেছেন। এ বার গ্রেটার হায়দরাবাদ পুরসভা নির্বাচন। বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তবে টিআরএস-এর কাছে বার্তা পৌঁছে গিয়েছে। মানুষ পরিবর্তন চান।”
তেলেঙ্গানার ২৫টি বিধানসভা এবং চারটি লোকসভা কেন্দ্র পরে জিএইচএমসি এলাকার মধ্যে। ফলে সেখানে ভাল ফল করতে পারা বিজেপি-র কাছে ভবিষ্যতের জন্য বিশেষ অর্থবহ। প্রচার পর্বে বিজেপি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন এআইএমআইএম নেতা আসাদুদিন্ন ওয়াইসিও। কিন্তু ভোট গণনা শুরু হতেই দেখা গেল, দক্ষিণের এই রাজ্যেও এবার গেরুয়া ঝড়ের ইঙ্গিত।