চলতি বছরের শুরুতে ফের খবরের শিরনামে রূপম ইসলাম। নিজের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কে জড়ালেন বাংলা রকের মাইল ফলক ‘ফসিলস’ এর জনপ্রিয় গায়ক। দিন কয়েক আগে একটি শো-তে নিজের মনে কথা বলার পর সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলেন রূপম। আর তার পরেই জবাব দিতে মাঠে নামলেন গায়ক।
সম্প্রতি একটি পোস্ট করেন রূপম, যেখানে লেখা, ‘অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী! ক্ষোভের কথা এত স্মিত হেসে বলি না। হাসিমুখে প্রতিবাদও করি না! চিত্র পরিচালকদের প্রসঙ্গে আরও কিছু কথা।’ কার উদ্দেশ্যে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন গায়ক?
চলছে বাংলা ব্যান্ড ‘ফসিলস’ এর ‘জানুয়ারি ট্যুর’। সেই তালিকা অনুযায়ী গত ২৫ জানুয়ারি এই ব্যান্ডের শো ছিল বর্ধমানে। সেখানেই রূপম নাকি মন্তব্য করেছিলেন, টলিউডের পরিচালকরা তাঁর নাম এবং খ্যাতিকে ব্যবহার করছেন ছবি হিট করানোর জন্য। ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই রূপমকে ঘিরে শুরু হয় জলঘোলা। একের পর এক রিলসের ঝড়, সেই সঙ্গে নানা মন্তব্য উঠে আসে নেটমাধ্যমে। কোথাও ‘তীব্র আক্রমণ’, কোথাও লেখা হচ্ছে ‘রূপমের ক্ষোভ প্রকাশ’।
এবার এই সমস্ত মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরাসরি কলম শানালেন গায়ক। নিজের করা ফেসবুক পোস্টে কড়া ভাষায় জবাব দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘কোথাও শিরোনামে লিখছে ‘ক্ষোভ প্রকাশ’, কোথাও ‘তীব্র আক্রমণ’, কোথাও আবার নতুন উদ্ভট বাংলায় ‘তীব্র প্রকাশ’, যা বস্তুতপক্ষে অর্থহীন। তবে শিরোনামগুলির মধ্যে মিল হল— এ সবই নাকি চিত্রপরিচালকদের ‘বিরুদ্ধে’ বলা।’
যে রিলসগুলি ক্রমাগত উঠে আসছে ফেসবুক ফিডে, সে বিষয়ে তিনি লিখেছেন, ‘অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী। ঠিক তেমনই আজকের যুগের অল্প ভিডিও বা বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ‘রিলস’— কারণ তাতে অর্ধ সত্য প্রকাশিত হয়, বাকি অর্ধেক মানুষের সামনে এসে পৌঁছয় না। বা পৌঁছতে দেওয়া হয় না। অ্যাটেনশন স্প্যান কমছে, নাকি আমরা কমাতে বাধ্য করছি— এটা ভেবে দেখা যেতেই পারে। আমাদের মতো রক পারফর্মারদের পারফর্মেন্সে যুগ-যুগ থেকেই উদ্ভট রস, তাণ্ডব রস, খেয়াল রস ছুঁয়ে যাওয়া আছে, যার একটা কনটেক্সট বা প্রসঙ্গ থাকে। সম্পূর্ণ কনসার্ট দেখলে ব্যাপারটা বেশ বোঝা যায়। এসব কথা কনসার্টকর্মীরা জানেন, বা তাঁদের জানবারই কথা।’
যে বিষয় ঘিরে বিতর্কে রূপম, পরিচালকদের নিয়ে ওঠা প্রসঙ্গকেও এড়িয়ে যাননি তিনি। লিখেছেন,’ হ্যাঁ— এ রকম কিছু ঘটলে যে তীব্র ক্ষোভ, বিরক্তি এবং বিতৃষ্ণা তৈরি হবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এই ক্ষোভ হঠাৎ পথভ্রষ্ট হয়ে চিত্রপরিচালকদের ‘বিরুদ্ধে’ আছড়ে পড়তে যাবে কেন? যাওয়ার তো কথা নয়। যায়ওনি। ক্ষোভের কথা তো আমি স্মিত হেসে বলি না। প্রতিবাদও হাসিমুখে করি না। ডিপ্লোম্যাটিক দ্বিচারিতা আমার ধর্ম নয়। শুধু জনতার বাঁ দিক না ডান অংশ— কোন দিকের গর্জন বেশি— এই অংশের ডিপ্লোমেসি ফসিলস ‘সার্কাস’এর অংশ। এটা স্ক্রিপ্টেড। কিন্তু সোজা কথা যে সোজা ভাষায় বলে দেয়— তার মধ্যে যে ডিপ্লোমেসি নেই— এ কথা বোধহয় সুবিদিত এতদিনে।’