বয়সের ভারে ঝুঁকেছে শরীর, হাতে চোট। তাই নিয়ে পৌঁছলেন তিনি। দর্শকাসনে বসেছিলেন, নাম ঘোষণা হতেই আবেগে ভিজল দুই চোখ। ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মঞ্চে ‘দাদাসাহেব ফালকে’ সম্মানে ভূষিত হলেন প্রবীণ অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। পুরস্কার নেওয়ার পর এদিন মঞ্চে বক্তব্য রাখেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এই মঞ্চে এর আগে আমি তিন বার এসেছি আপনাদের আশীর্বাদে। কিন্তু প্রথমবার জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর আমার কী হয়েছিল, সেই কথা এই প্রথমবার জানাব আপনাদের।’ মজার ছলেই বলতে থাকেন, “প্রথম জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর লোকজনের প্রশংসা পেয়ে আমার মাথা একটু একটু করে খারাপ হতে শুরু করে। যে বিশাল কিছু করে ফেলেছি আমি। সেই সময় মুম্বইতে একটা স্ক্রিনিংয়ের আয়োজন করা হয়, যেখানে ‘মৃগয়া’ দেখে যদি পছন্দ হয় তাহলে সিনেমার ডিস্ট্রিবিউশন হবে। আমিও পৌঁছে যাই। ভাবি যে আমাকে দেখে ওঁর পছন্দ হতে পারে, আমাকে কাজে নিতে পারেন। সিনেমা শেষ হওয়ার পর সেই সম্মানীয় ব্যক্তিকে আমি জিজ্ঞেস করি যে ‘স্যার, সিনেমা কেমন লাগল?’ তিনি আমাকে বলেন, ‘সিনেমা ভাল লাগল, তুমিও দারুণ অভিনেতা। কিন্তু জামাকাপড় পরলে তোমাকে কেমন লাগবে?’ আমি এক মুহূর্তের জন্য চমকে যাই, যে আমি কি ওঁর সামনে জামাকাপড় ছাড়া দাঁড়িয়ে আছি?’ মিঠুন চক্রবর্তীর কথা শুনে লুটোপুটি মন্ত্রী থেকে দর্শক সকলেই।’ বলাবাহুল্য, গায়ের রঙ নিয়ে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে বহুবারই অভিনেতাকে। নিজেই জানিয়েছিলেন সেই কথা। তবে হেরে যাওয়ার পাত্র তিনি নন। মিঠুন বলেন, ‘গায়ের রঙ বদলাতে তো পারব না, কিন্তু আমি নাচ করতে পারি। এমন নাচ করব যে দর্শক আমার পা দেখবেন, তাঁদের চোখ আর আমার ত্বক, মুখের দিকে চোখ যাবে না।’ নবীন প্রজন্মের উদ্দেশে এরপর অভিনেতা বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু অর্থ নেই তাঁদের কাছে। তাঁদের বলব, আত্মবিশ্বাস হারাবে না। টাকাপয়সা না থাকলেও আশা ছাড়বে না। আর স্বপ্ন নিশ্চয়ই দেখবে। মনে রাখবে, নিজে ঘুমিয়ে পড়লেও স্বপ্ন যেন কোনওদিন না ঘুমায়।’