বিশ্বের সমস্ত করোনা আক্রান্ত দেশগুলিই প্রতিষেধক পাবে। টিকার দুটি করে ডোজ পাবে সবাই, এমনই আশ্বাস দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। পৃথিবীর বৃহত্তম ভ্যাকসিন বন্টন কর্মসূচী কোভ্যাক্সের আওতায় থাকা দেশগুলি তো বটেই, উন্নয়নশীল ও গরিব দেশগুলিতেও টিকার ডোজ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হু-র সহকারী ডিরেক্টর জেনারেল মারিয়ানগেলা সিমাও। রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনে সিমাও বলেছেন, বিশ্বের ৫০টি দেশে করোনার টিকাকরণ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত। তারা বিপুল খরচ করে টিকার ডোজ কিনে নিতে পেরেছে। তবে পিছিয়ে পড়া ও অনুন্নত দেশগুলিতেও টিকার বন্টন চলছে। কোভ্যাক্স প্রকল্পে সব দেশেই টিকা পৌঁছে দেওয়া হবে। টিকার বিতরণের জন্য বিশ্বের নানা দেশকে জুড়ে গ্লোবাল কমিটি বানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এর নাম ‘ কোভিড ভ্যাকসিন গ্লোবাল অ্যাকসেস ‘ তথা ‘ কোভ্যাক্স ‘। এর উদ্দেশ্য হল চাহিদা অনুযায়ী সব দেশেই করোনার টিকা পৌঁছে দেওয়া, বিশেষত যে দেশগুলিতে সংক্রমণের হার ও মৃত্যু বেশি তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া। কোভ্যাক্সের নেতৃত্বে আছে হু। তাদের সঙ্গে ভ্যাকসিন বন্টন ব্যবস্থার তত্ত্বাবধান করবে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ারডনেস ইনোভেশন ও আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা গাভি। ভারত, নরওয়ে, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ারডনেস ইনোভেশন। অন্যদিকে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, উদ্যোগপতিদের সাহায্যে গরিব ও পিছিয়ে পড়া দেশগুলিতে টিকা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে গাভি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগ রেখেই কাজ করে গাভি। হু জানাচ্ছে এই গ্লোবাল কমিটির কাজই হল টিকার সমবন্টনের দিকে খেয়াল রাখা। কারণ ইতিমধ্যেই টিকার ডোজ ‘বুক’ করে রাখতে বিশ্বের ধনী দেশগুলির মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা বলাবলি করছেন, টিকার ডোজের যদি সমবন্টন না হয়, তাহলে করোনা অতিমহামারী ঠেকানো অসম্ভব ব্যাপার। বিশ্বের পিছিয়ে পড়া দেশ এবং যেখানে সংক্রমণের হার বেশি সেখানেই টিকা আগে পৌঁছনো দরকার। কোন দেশ বেশি পয়সা দিচ্ছে বা কার ক্ষমতা বেশি, এই দেখে যদি টিকার বিতরণ শুরু হয় তাহলে মহামারী রোখা যাবে না। নিঃস্বার্থভাবে সংহতির পথে টিকার বিতরণ হওয়া দরকার, ক্ষমতা ও রাজনৈতিক স্বার্থ দেখে নয়। হু জানিয়েছে ২০২১ সালের শেষে ২০০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ চলে আসবে। আক্রান্ত দেশগুলি অন্তত ২০ শতাংশ করে টিকার ডোজ পাবে। ৯২টি পিছিয়ে পড়া ও গরিব দেশে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।