ভোট পরবর্তী হিংসায় এ রাজ্যে যে শুধুমাত্র বিজেপি কর্মীরাই আক্রান্ত হয়েছিলেন তা কিন্তু নয়। বরঞ্চ যত সংখ্যক বিজেপি কর্মী ও সমর্থকেরা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তার থেকে অনেক বেশি তৃণমূলকর্মী ও সমর্থকেরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই এখন সেই সব ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জে গত ৪ মে খুন হয়েছিলেন তৃণমূলকর্মী শাহিনুর রহমান। তুফানগঞ্জের কিলাখানা এলাকায় ভুট্টা খেত থেকে উদ্ধার হয়েছিল তাঁর দেহ। সেই সময় মৃতের পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয় যে তৃণমূল করার অপরাধেই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে খুন করেছে শাহিনুরকে। ওই খুনের ঘটনায় ১৬ জনের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই সিবিআই শনিবার ৪জনকে গ্রেফতার করেছে যারা সকলেই সক্রিয় বিজেপি কর্মী।
ভোট পরবর্তী হিংসা: তুফানগঞ্জে সিবিআইয়ের জালে ৪ বিজেপি কর্মী
Read More-বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হচ্ছে গভীর নিম্নচাপ, মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গে
জানা গিয়েছে, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে নেমে কিছুদিন আগেই তুফানগঞ্জ গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। কথা বলেছিলেন স্থানীয়দের সঙ্গে। সেই সময়েই তাঁরা ঘটনার পুনর্নিমাণও করান। সেই সঙ্গে ঘটনায় যে ১৬জনের নামে এফআইআর করা হয়েছিল তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে কথাও বলেন। এরপরেই গতকাল ৪জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই ৪জনই এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত। তবে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া মিহির চন্দ্র, গোবিন্দ দাস, চন্দন দাস ও ঈশ্বর দাসের মধ্যে ঈশ্বরের নাম মূল এফআইআরে ছিল না। তবে সিবিআই বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রেফতার করেছে তাঁকে। এদিনই এই ৪জনকে তুফানগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
তব এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ওপরে কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ হয়েছে গেরুয়া শিবির। ঈশ্বর দাসের স্ত্রী পিঙ্কি দাস এদিন জানিয়েছেন, ‘শনিবার দুপু্রে আমার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই গোপালপুরে নিয়ে যায়।রাত ন’টার সময়ে তাঁরা ফোন করে জানান যে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ এই গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি মালতি রাভা আবার জানিয়েছেন, ‘বিজেপির নেতা কর্মীদের অনেক ক্ষেত্রেই ফাঁসানো হয়। তবে সিবিআই নিরপেক্ষ তদন্ত করছে। নিশ্চয় ঠিকঠাক বিচার হবে। অনেক সময় গোষ্ঠীকোন্দলেই মৃত্যু হয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। সেক্ষেত্রেও বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হয়েছে। তবে সিবিআই নিরপেক্ষভাবেই ঘটনার তদন্ত শুরু করছে। আগামী দিনে প্রকৃত দোষীরা ধরা পড়বে। ঘটনার প্রকৃত তথ্য উঠে আসবে।’