গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণ দিয়েছিলেন বীরের মতোই। চিনের সেনাদের আচমকা হামলায় নিরস্ত্র অবস্থাতেও রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। ১৫ জুন লাদাখ সীমান্তের সেই সংঘাতে শহিদ কর্নেল সন্তোষবাবুকে সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান মহাবীর চক্রে সম্মানিত করা হল। যুদ্ধক্ষেত্রে অসীম সাহসিকতার প্রদর্শন, শত্রু সেনার মুখোমুখি বীরের মতো লড়াই ও যোগ্য নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এই সম্মান দেওয়া হল শহিদ কর্নেল সন্তোষবাবুকে। পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ১৬ বিহার রেজিমেন্টের কর্নেল ছিলেন সন্তোষবাবু। শত্রু সেনাদের কুনজর থেকে ভারতের সীমান্ত রক্ষার গুরুদায়িত্ব ছিলেন তাঁর ওপরে। গত ১৫ জুন সীমান্ত চুক্তি ভেঙে গালওয়ানে আচমকা হামলা চালায় চিনের বাহিনী। রুখে দাঁড়ায় ভারতীয় সেনা। দুপক্ষের চরম হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এই আচমকা হামলার জন্য প্রস্তুত ছিল না ভারতের বাহিনী। বেশিরভাগ সেনাই সেদিন ছিলেন নিরস্ত্র। অন্যদিকে, লোহার রড, কাঁটা লাগানো ব্যাট নিয়ে ভারতীয় বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল চিনের লাল ফৌজ। এই হামলায় শহিদ হয়েছিলেন ভারতের ২০ জন জওয়ান। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ জওয়ানই ছিলেন ১৬ বিহার রেজিমেন্টের। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন ৩৯ বছরের কর্নেল বিকামুল্লা সন্তোষ বাবু। তিনিও শহিদ হন ওই হামলায়। কিন্তু মৃত্যুর আগে অবধি ভারতীয় জওয়ানদের নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেনাদের পাল্টা মারে চিনের অন্তত ৪৫ জন সেনা নিহত হয়েছিল সেইদিন। সন্তোষবাবুর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, লকডাউনের আগেই বদলির নির্দেশ এসেছিল সন্তোষবাবুর। কিন্তু যাওয়া হয়নি। সীমান্ত আগলে বসেছিলেন তিনি। ভদ্র ব্যবহার, অল্প কথার মানুষ হিসেবেই সহকর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন শহিদ কর্নেল। সেনাবাহিনীর আর এক কর্নেল এস শ্রীনিবাস রাও জানিয়েছেন, সন্তোষকে দু’বছরের জন্য তাঁর নিজের রাজ্যের সেকেন্দরাবাদে বদলি করা হয়েছিল। মাঝে মধ্যেই এ নিয়ে তাঁদের কথা হত। নিহত কর্নেল নাকি বলচেন, পরিবারের সঙ্গে থেকে নিজের রাজ্যকে সেবা করার সুযোগ পাব। কিন্তু ফেরা আর হয়নি তাঁর। শহিদ কর্নেল সন্তোষবাবুর সঙ্গেই আজ বীর চক্র সম্মান দেওয়া হবে আরও পাঁচ জওয়ানকে। মহাবীর চক্রের পরেই এটি সেনাবাহিনীর তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মান। তাছাড়া, সূর্যচক্র সম্মান পাবেন আরও তিন সেনা জেওয়ান।