গত মার্চ মাসে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির বাড়ির সামনে বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি মেলে। পরে ওই গাড়ির মালিক মনসুখ হিরানি খুন হন। খুনের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসাবে মুম্বই পুলিশের কর্তা শচীন ভাজকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। শুক্রবার ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা জানাল, মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে ফাইভ স্টার হোটেলের একটি ঘর থেকে তোলাবাজ চক্র চালাতেন সঞ্জয় ভাজ। এক ব্যবসায়ী ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে ১০০ দিনের জন্য ওই ঘরটি ভাড়া নিয়েছিলেন। সঞ্জয় ভুয়ো নামে ওই ঘরটি ব্যবহার করতেন।
এনআইএ জানায়, মুম্বই পুলিশে সঞ্জয় ভাজের কয়েকজন সহকর্মীকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। অদূর ভবিষ্যতে আরও কয়েকজন গ্রেফতার হতে পারেন। একটি সূত্রে জানা যায়, সঞ্জয় ভাজ মুম্বই পুলিশে ‘শুটিং স্পেশালিস্ট’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ভুয়ো আধার কার্ড ব্যবহার করে হোটেলের ১৯৬৪ নম্বর ঘরটি তিনি ব্যবহার করতেন। তাঁর ভুয়ো নাম ছিল সুশান্ত সদাশিব খামকার।এনআইএ-র এক অফিসার জানিয়েছেন, সঞ্জয় অতীতে জনৈক ব্যবসায়ীর উপকার করেছিলেন। তিনিই হোটেলের ঘরটি ভাড়া করেন। ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে ঘর ভাড়া করা হয়েছিল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ইনোভা গাড়িতে চড়ে ওই হোটেলে ঢোকেন সঞ্জয়। ২০ ফেব্রুয়ারি হোটেল থেকে বেরোন ল্যান্ড ক্রুজারে চড়ে।
গত ১৩ মার্চ এনআইএ সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে। তাদের ধারণা, মুকেশ আম্বানির বাড়ির কাছে বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি রাখার ঘটনায় ওই পুলিশকর্তার হাত থাকতে পারে। শিল্পপতির বাড়ির কাছে বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি পাওয়ার পরে পদ থেকে সরতে হয় মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিংকে। তিনি পরে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তোলাবাজ চক্র চালান। তার মধ্যে আছেন ধৃত পুলিশকর্তা সঞ্জয় ভাজ। তোলাবাজদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, প্রতি মাসে অন্তত ১০০ কোটি টাকা তুলতে হবে।
অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে মুম্বই হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন পরমবীর সিং। বিচারপতি তাঁকে প্রশ্ন করেন, আপনি এফআইআর করেননি কেন? বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সি জে দত্ত বলেন, ‘আপনি একজন পুলিশ কমিশনার। আপনার জন্য কি আইনকে অমান্য করা হবে? পুলিশ অফিসার, মন্ত্রী এবং রাজনীতিকরা কি আইনের উর্ধ্বে? নিজেকে অত বড় করে দেখবেন না। আইন আপনার থেকে বড়।’