যতদিন পর্যন্ত না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে ততদিন বাগবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থা করবে রাজ্য। একইসঙ্গে দ্রুত তাঁদের আগের জায়গায় ঘর তৈরি করে দেবে কলকাতা পুরসভা— বৃহস্পতিবার বাগবাজার ব্রিজ সংলগ্ন হাজার বস্তি এলাকায় গিয়ে সর্বস্ব–হারানো বস্তিবাসীদের এই আশ্বাস দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ আগুন লাগে বাগবাজারের হাজার বস্তিতে। দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছনোর আগেই বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন, একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডারে শুরু হয় বিস্ফোরণ। আগুনে পুড়ে গিয়েছে ১০০টিরও বেশি ঝুপড়ি। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন প্রায় ৬০০ মানুষ। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বস্তি সংলগ্ন মায়ের বাড়ির উদ্বোধনী কার্যালয়ে। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পরের দিন, বৃহস্পতিবার বাগবাজারের ওই বস্তি পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন তিনি বলেন, ‘কাল যতক্ষণ পর্যন্ত আগুন না নিভেছে ততক্ষণ আমি খোঁজ নিয়েছি। আমার সঙ্গে বহু বার অতীন ঘোষ, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শশী পাঁজা, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, পুলিশ কমিশনারের কথা হয়েছে। দমকলকর্মী, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ, সাধারণ মানুষ, স্বেচ্ছাসেবকরা সবাই মিলে কাজ করেছে।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আগুন নেভানোর পর আমাদের কাজ ছিল আপনাদের কোনও কোনও জায়গায় স্থানান্তর করিয়ে থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থা করা। সেগুলো আমরা করেছি। আজ আর কাল এখানে পরিষ্কারের কাজ চলবে। তার পর আগের মতো যাঁর যেখানে ঘর ছিল তা তৈরি করে দেবে কলকাতা পুরসভা। আপনাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। যাঁর যেরকম ছিল সেভাবেই ঘর করে দেবে।’
এদিন ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের সকলকে ৫ কেজি করে চাল, ডাল, আলু এবং বাচ্চাদের দুধ, বিস্কুট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী শশী পাঁজাকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে বস্তির মহিলাদের ৪–৫টা শাড়ি দিতে হবে। এবং বস্তির বাসিন্দাদের মধ্যে যে সব পুরুষ ও বাচ্চারা রয়েছে তাদের জামাকাপড়, চাদড়, কম্বল দেওয়ার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সরাসরি বস্তিবাসী ও মায়ের ঘরের মহারাজদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের অভাব–অভিযোগ শোনেন এবং বলেন, ‘ভরসা রাখুন। সব করে দেব।’ দমকল কাল প্রায় ১ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছয় বলে এদিন অভিযোগ করেন হাজার বস্তির এক ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা। সেই কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান তিনি।