লোকসভা ভোটের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যে ধরনের আর্থিক ভাতা ঘোষণা করে, তাকে ‘রাবড়ি’ বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মোদি বলেছিলেন, ‘এ হল ভোটারদের লুব্ধ করে ভোট কেনার চেষ্টা।’ অথচ বুধবার অর্থাৎ ১৭ জুলাই মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডে সরকার যে ঘোষণা করলেন, তাতে স্পষ্ট যে এখন সেই ‘রাবড়িতেই’ মোক্ষলাভের পথ খুঁজছে বিজেপির জোট সরকার। মহারাষ্ট্রে বিজেপি, শিবসেনা ও এনসিপি-র জোট সরকার চালাচ্ছে। এদিন একনাথ শিন্ডে সরকার ঘোষণা করেছে, বারো ক্লাসের পরীক্ষায় পাশ করলেই সরকার ৬ হাজার টাকা করে ভাতা দেবে ছাত্রছাত্রীদের। ডিপ্লোমার ছাত্রছাত্রীদের ৮ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। আর স্নাতক পাশ করা ছেলেমেয়েরা মাসে ১০ হাজার টাকা করে ৬ মাস পাবে। অর্থাৎ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
উনিশের লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে স্যুইপ করেছিল বিজেপি-শিবসেনা। কিন্তু গত পাঁচ বছরে প্রথমে শিবসেনার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ, পরে শিবসেনা ও এনসিপিতে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপি ভেসে থাকার চেষ্টা করেছে। অথচ লোকসভা ভোটে দেখা গেছে মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি আসনে জিতেছে কংগ্রেস। সাবেক জাতীয় দল ১৩টি আসনে জিতেছে। শিবসেনা উদ্ধব শিবির জিতেছে ৯টি আসনে। আর শরদ পাওয়ারের এনসিপি জিতেছে ৮টি আসনে। মহারাষ্ট্রে লোকসভার ৪৮টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে ৩০টি জিতে নিয়েছে কংগ্রেস, উদ্ধব, শরদ পাওয়ারের জোট।
এতেই এখন সিঁদুরে মেঘ দেখছে একনাথ শিন্ডে সরকার। এমন নয় যে এই সব ভাতা ঘোষণা অভিনব। পশ্চিমবঙ্গে ক্লাস টেন পাশ করলেই ছেলেমেয়েরা ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পায়। সেই সঙ্গে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের ব্যবস্খা রয়েছে। যাতে মাত্র ৪ শতাংশ হারে শিক্ষা ঋণ দেওয়া হয়। মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, এতে ১০ লক্ষ তরুণ তরুণী উপকৃত হবে। সরকারের এজন্য খরচ হবে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, মহারাষ্ট্রে বিজেপি একনাথের জোট সরকারের এই ঘোষণাতেই পরিষ্কার যে রাজনৈতিক ভাবে তারা কতটা বিপন্ন বোধ করছে। তাই আপাতত রাবড়ির কথা শিকেয় তুলে খয়রাতিতে ঝাঁপ দিয়েছে বিজেপি সরকার।