রিক্সা চালিয়ে দিনযাপন করা ব্যক্তির বকেয়া আয়করের পরিমাণ ৩.৪৭ কোটি টাকা! আয়কর বাবদ ৩.৪৭ কোটি টাকা জমা দিতে বলে সম্প্রতি মথুরার এক রিকশাচালককে নোটিশ পাঠায় আয়কর দতর। নোটিশ প্রাপকের নাম প্রতাপ সিংহ। পরে এই বিষয়ে প্রতাপ আয়কর দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে অবাক হন তাঁরাও। আয়কর আধিকারিকদের মত, এটা কোনও জালিয়াতের কারসাজি।
প্রতাপ সিং ব্যাঙ্কে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে প্রায় আড়াই বছর আগে তার বাড়ির কাছে জন সুবিধা কেন্দ্রে গিয়ে প্যানের জন্য আবেদন করেছিলেন। সেন্টার অপারেটর জানান, এক মাসের মধ্যে তার কার্ড আসবে। কিন্তু সেই কার্ড আসেনি। রেকর্ড খতিয়ে দেখা যায়, কুরিয়ার কোম্পানি এই কার্ড দিয়েছে সঞ্জয় সিং নামক এক সাইবার ক্যাফে অপারেটরকে দেয়। কুরিয়ারের নিয়ম অনুসারে, এই প্যান কার্ডটি হোল্ডারকে নিজেই বা তার বৈধ ঠিকানায় পৌঁছে দিতে হবে। এদিকে রিকশাচালক প্রতাপ প্যান কার্ডের জন্য চক্কর দিতে থাকেন। তখন প্রতাপকে প্যান কার্ডের রঙিন প্রিন্ট দেওয়া হয়। এদিকে রিকশাওয়ালার জানা ছিল না যে তাঁর নামে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা চলছে।
যারা রিকশাচালকের আসল প্যান কার্ড হাতিয়ে নিয়েছিল, তারা সেই কার্ডটি জিএসটি-তে নথিভুক্ত করে। তবে প্রতারক জিএসটিতে নাম নিজেরই রেখেছিল। এক বছরে সেই জিএসটির অধীনে (২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ) প্রায় ৪৩.৪৪ কোটি টাকা টার্নওভার হয়ে গিয়েছে। আয়কর এবং জিএসটির মধ্যে সমঝোতা স্মারকের কারণে, উভয় বিভাগ একে অপরের সাথে তথ্য ভাগ করে। এই তথ্য পেয়ে আয়কর দফতরের এই কেসটিকে সন্দেহজনক বলে মনে হয়। কারণ এতে বিপুল পরিমাণ টার্নওভার থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন দাখিল করা হচ্ছিল না। এপরই ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্যান কার্ড ধারককে নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের পর নোটিশ পাঠানো হলেও খুব সম্ভবত রিকশাচালকের কাছেও পৌঁছায়নি। এরপর চূড়ান্ত এক নোটিশ পাঠানো হলে সেটি হাতে পান রিকশাচালক। তখন তাঁর মাথায় হাত পড়ে। পরবর্তীতে বিষয়টি খতিয়ে দেখলে আসল তথ্যটি সামনে আসে।