লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেট্রল এবং ডিজেলের দাম। নাভিঃশ্বাস উঠেছে আমজনতার। তা নিয়ে অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যাটারিচালিত ই-স্কুটারে করে নবান্নে গেলেন তিনি।
এমনিতে মাসখানেক অপরিবর্তিত থাকার পর গত ৬ জানুয়ারি থেকে উর্ধ্বমুখী হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এমনকী মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ওড়িশার মতো কয়েকটি জায়গায় পেট্রলের দর সেঞ্চুরি করে ফেলেছে। কলকাতায় দাম নেহাত কম নয়। প্রতি লিটার পেট্রলের দাম পড়ছে ৯১ টাকা ১২ পয়সা। আর এক লিটার ডিজেল বিকোচ্ছে ৮৪ টাকা ২০ পয়সায়। তারইমধ্যে গত সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে প্রতি লিটার পেট্রল-ডিজেলে এক টাকা সেস প্রত্যাহার করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাতেও খুব একটা সুরাহা মেলেনি। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভর্তুকিহীন রান্নার গ্যাসের দাম। তা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিবাদে সামিল হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাস্তায় নেমে হয়েছে আন্দোলন। আর এবার একেবারে অভিনব পন্থায় প্রতিবাদের পথে হেঁটেছেন মমতা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা নাগাদ কালীঘাটের বাড়ি থেকে ই-স্কুটারে করে নবান্নের উদ্দেশে রওনা দেন। অন্যদিন গাড়িতে করে রাজ্যের সচিবালয়ে যান মমতা। বাইকের সামনে ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দু’জনের মাথায় নীল রঙের হেলমেট, গলায় প্রতিবাদের পোস্টার দেখা যায়। আশপাশে বাইকে করে ছিলেন নিরাপত্তীরক্ষীরা। তৃণমূলের কোনও নেতাকর্মী বা রাজ্যের মন্ত্রিসভার অন্য কোনও সদস্য নেই। একেবারে ধীরগতি এবং সাবধানে বাইক নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন ফিরহাদ।
রাজপথে মমতাকে ই-স্কুটারে সওয়ারি হতে দেখে রাস্তার দু’পাশে মানুষের ভিড় জমে যায়। তাঁদের উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা যায় মমতাকে। যিনি আগে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় বাইকে সওয়ারি হয়েছিলেন। মূলত নিরাপত্তার কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে দু’চাকার বাহন ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে অভিনব প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন
পরে নবান্নে গিয়ে মমতা জানান, লাগামহীনভাবে পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ছে। যখন নরেন্দ্র মোদীরা ক্ষমতায় এসেছিলেন, তখন জ্বালানি তেলের দাম কত ছিল আর এখন দর কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, সেই ফারাক দেখলেই বোঝা যাবে। শুধু নির্বাচন এলেই বিনামূল্যে গ্যাস দেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেটা রান্নার গ্যাস নয়, ভাঁওতা বা মিথ্যার ‘গ্যাস’ দিয়ে যায়। একইসঙ্গে সন্ধ্যায় ই-স্কুটারে করেই নবান্ন থেকে বাড়ি ফিরবেন বলে জানান মমতা।