শিশুর হাত-পায়ে আড়ষ্টতা দেখা দিলে অনেক বাবা-মা হয়তো ভাবেন এটা অস্থায়ী সমস্যা, কিছুদিন পরে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই লক্ষণকে কখনোই অবহেলা করা যাবে না। কারণ, এটি কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে।
**হাইপারটোনিয়া – একটি গুরুতর সমস্যা:**
শিশুর হাত-পায়ে আড়ষ্টতার একটি প্রধান কারণ হল হাইপারটোনিয়া। এই রোগে শিশুর পেশি অস্বাভাবিকভাবে টাইট হয়ে যায়, ফলে তার স্বাভাবিকভাবে হাত-পা নাড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে।
**কেন হয় হাইপারটোনিয়া?**
হাইপারটোনিয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
* **মস্তিষ্কের বিকাশের সমস্যা:** মস্তিষ্ক যদি সঠিকভাবে বিকাশ না পায় তাহলে শিশুর পেশি নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে।
* **জন্মগত সমস্যা:** কিছু শিশু জন্মগতভাবেই হাইপারটোনিয়ার সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
* **অন্যান্য রোগ:** সেরিব্রাল প্যালসি, মেরুদণ্ডের সমস্যা ইত্যাদি রোগের কারণেও হাইপারটোনিয়া হতে পারে।
**লক্ষণগুলি কী কী?**
হাইপারটোনিয়ার লক্ষণগুলি শিশু থেকে শিশুতে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত দেখা যায়:
* হাত-পা আঁটসাট করে রাখা
* শরীরের কোনো অংশ অস্বাভাবিকভাবে বাঁকা থাকা
* হাঁটাচলায় অসুবিধা
* মাথা ধরে রাখতে সমস্যা
* খাওয়া-দাওয়ায় সমস্যা
**কী করবেন?**
* **চিকিৎসকের পরামর্শ:** যদি আপনার শিশুর এই ধরনের কোনো লক্ষণ দেখেন তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
* **পরীক্ষা:** চিকিৎসক শিশুর শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং প্রয়োজনে অন্যান্য পরীক্ষাও করতে পারেন।
* **চিকিৎসা:** হাইপারটোনিয়ার চিকিৎসা শিশুর বয়স এবং রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে। চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
**আপনার শিশুর ভবিষ্যৎ:**
হাইপারটোনিয়া একটি গুরুতর সমস্যা হলেও, যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক শিশুই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। তাই, যদি আপনার শিশুর এই সমস্যা থাকে তাহলে হতাশ হবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর চিকিৎসা করান এবং তাকে সব সময় সমর্থন করুন।
**বিশেষজ্ঞের মত:**
“শিশুর হাত-পায়ে আড়ষ্টতাকে অবহেলা করা কখনোই উচিত নয়। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে শিশুর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে।”