এত বড় দেশ ভারতবর্ষ। আর তার রাজধানী কেবল একটাই দিল্লি থাকবে কেন? শনিবার রোড রোডে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এই প্রশ্নই তুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতের চারটি প্রান্তে ভারতের রাজধানী করার দাবি জানালেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘একসময় ভারতের রাজধানী ছিল কলকাতা। কলকাতাকে ফের ভারতের অন্যতম রাজধানী করতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘কলকাতা একদিন ভারতবর্ষের রাজধানী ছিল। কলকাতা থেকে ইংরেজরা ভারতবর্ষ চালাত। আজ ভারতবর্ষের একটা রাজধানী কলকাতা কেন হবে না? আমি তো মনে করি, ভারতবর্ষের একটা রাজধানী কলকাতা হতে হবে।’ কলকাতাকে কেন ভারতের আর এক রাজধানী করা উচিত তার কারণও এদিন বলেছেন মমতা।
তাঁর কথায়, ‘কলকাতা ভারতের রাজধানী হোক কারণ হল আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম। স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্মদাতা ছিল বাংলা, বিহার। নবজাগরণ শুরু হয়েছে বাংলা থেকে। বাল্য বিবাহ রোধ, বিধবা বিবাহ প্রচলন, সতীদাহ প্রথা নিবারণ— ভারতবর্ষের এ সব সামাজিক সংস্কারের জন্ম হয়েছে বাংলা থেকে। তাই বাংলা সইবে না কোনও অবহেলা। বাংলা মাথা নীচু করতে জানে না। বাংলা মাথা উঁচু করে চলতে জানে।’
দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব ও উত্তর পূর্ব— দেশের এই চার প্রান্তে ভারতের রাজধানী থাকতে হবে। এ নিয়ে সংসদীয় অধিবেশনে দলের সাংসদদের দাবি তুলতে বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘সংসদের চারটে অধিবেশন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ভারতবর্ষের ৪টে জায়গায় করা উচিত।’
কোন কোন জায়গা রাজধানী করা যেতে পারে সেই কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, দক্ষিণে তামিলনাড়ু, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ বা কেরল; উত্তরে উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, রাজস্থান বা মধ্যপ্রদেশ; পূর্বে বিহার, ওডিশা, বাংলা অর্থাৎ কলকাতা এবং আর একটা উত্তর–পূর্বাঞ্চলে রাজধানী করা যেতে পারে।
প্রথমে শুধু কলকাতাকে রাজধানী করা নিয়ে দাবি জানালেও পরে সারা দেশের চার প্রান্তে রাজধানী হওয়ার দাবি তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আমরা সংকীর্ণ মানসিকতার নই। আমরা সবার জন্য বলছি।’
কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। ওয়ান লিডার, ওয়ান নেশন? ওয়ান নেশন কার্ড, ওয়ান নেশন? ওয়ান পলিটিক্যাল পার্টি, ওয়ান নেশন — হোয়াট ইজ দ্য ভ্যালুয়েশন? উই ওয়ান্ট ইউনাইটেড ইন্ডিয়া।’