রাজ্যে যখন সরকারের উন্নয়নের ডালি নিয়ে দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে সরকার তখন শাসকদলকে মাত দিতে আসরে নামল বিজেপি যুব মোর্চা। একুশের আগে বেকারদের জন্য বড়সড় পদক্ষেপ গ্রহণ গেরুয়া শিবিরের। ২০২১-এর আগে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্ড প্রকাশ করল বিজেপি। ‘আর নয় অন্যায়’, ‘আর নয় বেকারত্ব’ এই দাবি তুলে সকলের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে ‘চাকরির প্রতিশ্রুতি কার্ড’ প্রকাশ করল বিজেপি।
মুকুল রায় ও সৌমিত্র খাঁ-এর হাত ধরে এই কার্ড প্রকাশিত হল হেস্টিংসের বিজেপির সদর নির্বাচনী কার্যালয় থেকে। বিজেপির তরফে এই প্রতিশ্রুতি কার্ড প্রকাশের মঞ্চে রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘বিজেপি রাজ্যের ৭৫ লক্ষ যুবকের কাছে যাবে। রাজ্যের ৭৮ হাজার বুথ এলাকায় প্রতিশ্রুতি কার্ড নিয়ে যাবেন বিজেপি কর্মীরা। প্রতিশ্রুতি কার্ড দিয়ে ৭৫ লক্ষ বেকার যুবকদের নাম নথিভুক্ত করা হবে।’ পাশাপাশি, আজ হেস্টিংস-এর দফতর থেকেই প্রথম নাম রেজিস্ট্রিও করা হয় আজ।
সৌমিত্র খাঁ আরও বলেন, ‘এদিন থেকেই প্রতিশ্রুতি কার্ড বিতরণ শুরু হয়ে গেল। এবার বিজেপি কর্মীরা বুথে বুথে যাবেন। বাংলায় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেবেন। এই প্রতিশ্রুতি কার্ড বিতরণের মাধ্যমে বাংলার বেকারত্বের চেহারা তারা সামনে তুলে ধরতে চায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সেইসঙ্গে ক্ষমতায় এলে তাদের চাকরির প্রতিশ্রুতিও দিয়ে রাখতে চান তারা।’ অন্যদিকে, সৌমিত্র খাঁ-এর এই বক্তব্যের পরই জল্পনা শুরু হয়ে যায় যে, বিজেপি যদি ক্ষমতায় এলে ৭৫ লক্ষ যুবককে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়, তা পালন করবে কী করে।
সরকারে আসার পর নাম নথিভূক্ত করার একটা জায়গা রয়েছে, বিভিন্ন কমিশন রয়েছে। তার মাধ্যমেই নিয়োগ হয়। কিন্তু একটা রাজনৈতিক দল যদি এভাবে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা কি পালন করা সম্ভব ? প্রশ্ন উঠে যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় বলেন, ‘আমরা তো চাকরি দেব প্রতিশ্রুতি দিতে পারি না। আমরা পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যুব সমাজকে। তাদের বেকারত্বের সঙ্গে সমব্যাথী আমরা। সরকারে এলে আমরা বেকার যুবকদের কথা অগ্রাধিকার দেব।
তাদের বেকারত্বের জ্বালা দূর করার চেষ্টা করব’ বলেও মন্তব্য করেন মুকুল রায়। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায় আরও দাবি করেন যে, বাংলায় এই মুহূর্তে ১৮ শতাংশ বেকারত্ব। আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন বেকার যুবকদের চপ ভাজতে। সিঙ্গুরে টাটার বিরুদ্ধে আন্দোলন তৃণমূলের অন্যতম বড় ভুল ছিল বলেও এদিন দাবি করেন মুকুলবাবু। অন্যদিকে, বিজেপির যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেকার যুবকদের অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
কিন্তু তা পূরণ করতে পারেননি। তিনি এখন দাবি করছেন ২ কোটি বেকার যুবককে চাকরি দিয়েছেন। তা যে সর্বৈব মিথ্যা, তা বোঝানোর জন্যই আমরা প্রতিশ্রুতি কার্ড নিয়ে ঘরে ঘরে যাব। রাজ্যে বেকারত্বের জ্বালায় কত যুবক জ্বলছে, তার একটা চিত্র আমরা খাঁড়া করব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে’। একই সঙ্গে রবিবারের সাংবাদিক বৈঠক থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুকুল রায় বলেন, ‘বেকার যুবকদের ভবিষ্যত্ নিয়ে রাজনীতি করবেন না।