“গোল্ডেন মিল্ক”- কি এটা?
একেবারেই আমাদের ঘরের জিনিস। প্রাচিন আয়ুর্বেদে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় হলদি দুধের উপকারিতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, ‘হলদি দুধ’ অর্থাৎ ‘হলুদ মেশানো’ দুধই হচ্ছে ‘গোল্ডেন মিল্ক” । এর মূল উপাদান? হলুদ আর দুধ। কিন্তু কেন এটা খাবেন এবং খেয়ে কি কি বেনিফিট পাবেন, কখন খেলে বেস্ট জানতে চাইলে পড়তে থাকুন।
গোল্ডেন মিল্কের রেসিপি
উপাদান
হলুদ পাউডার (হাফ কাপ)
সবসময় চেষ্টা করবেন হলুদ আস্ত কিনে নিজে ভাঙ্গিয়ে নিতে। বাজারে ভেজাল বিহীন পণ্য খুব কম। আর ভেজাল গোল্ডেন মিল্ক খাওয়া বা না খাওয়া একই কথা।
গোল মরিচের গুঁড়া (দেড় চা চামচ)
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান! ১৯৯২ সালের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, হলুদের সবচেয়ে দরকারি উপাদান হচ্ছে “কুকুরমিন’ (এটার জন্যই গোল্ডেন মিল্কের এত জয়জয়কার)। কিন্তু মানবদেহ কুকুরমিন ডাইজেস্ট করতে এবং ইউজ করতে অতটা সক্ষম নয়। কিন্তু অল্প একটু গোলমরিচ যদি হলুদের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয় সেটা কুকুরমিন দেহে অ্যাবজর্বেশন ২০০০% বাড়িয়ে দেয়। মানে? আপনি হলুদের পুরো গুণাগুণ এবং বেনিফিট তাই পাচ্ছেন!!
৫ টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অরগানিক নারিকেল তেল
প্রতিদিন অল্প একটু নারিকেল খাওয়া স্বাস্থ্য এবং ত্বকের জন্য খুবি ভালো। কিন্তু ভার্জিন নারিকেল তেল কোনভাবেই চুলায় গরম করা যাবে না। এতে এর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই এভাবে খেলে একি ঢিলে ২ পাখি মারতে পারছেন। আমি নিজের বানান নারিকেল তেল ব্যবহার করি। এ ধরনের খাঁটি ঘানি ভাঙ্গা নারিকেল তেল সংগ্রহ করতে পারলে সেটাই ইউজ করবেন । আর যদি নারিকেল তেল না পান, তবে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল একই পরিমাণে ব্যবহার করবেন। যেকোনো সুপারশপে পাবেন। এবং একই রুল মনে রাখবেন, এক্সট্রা ভার্জিন কোন তেল চুলায় দিয়ে রান্না করবেন না। এতে তেলের সব গুণাগুণই নষ্ট হয়।
প্রণালী-
হলুদ গুঁড়া ১ কাপ পানির সাথে মিক্স করে অল্প আঁচে ৬-৮ মিনিট চুলায় জ্বাল দিন। বেশ ঘন পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে নামিয়ে নিন।
হলুদ পেস্ট ঠাণ্ডা করে তাতে গোলমরিচের গুঁড়া আর তেল খুব ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন।
ব্যাস হয়ে গেল, এই পেস্ট একটা এয়ারটাইট জারে ফ্রিজে ২ সপ্তাহ পর্যন্ত রাখতে পারবেন। এতে আলসেমি করে গোল্ডেন মিল্ক খাওয়াও বন্ধ হবে না, আর রোজকার ঝক্কিও পোহাতে হবে না।
কখন? কীভাবে?
রোজ রাতে খুব হালকা উষ্ণ এক কাপ খাঁটি দুধের সাথে জার থেকে জাস্ট ১ চা চামচ পেস্ট নিয়ে মিক্স করে ফেলুন। তারপর খেয়ে নিন দুধটা। আর খেতে বেশি তিতা লাগলে দুধে ১ চা চামচ খাঁটি মধু মিক্স করবেন। স্বাদ আরও বাড়বে!
খাঁটি দুধ না পেলে গুড়ো দুধ ২ চা চামচ হালকা উষ্ণ পানিতে মিক্স করে তাতে পেস্ট মিশিয়ে নিতে পারেন।
কেন রাতে খাবেন?
ঘুমানোর আগে উষ্ণ দুধ খেলে ঘুম খুবি ভালো হয়। চেষ্টা করবেন রাত ৮ টার মধ্যে ডিনার শেষ করে রাত ১০ টার আগেই এক কাপ গোল্ডেন মিল্ক খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে। এতে রোজকার টায়ার্ডনেসটাও দূর হবে।