সারা দেশের মানুষকে কোভিড টিকা দেওয়া এখনই সম্ভব নয়। এমনটাই বললেন দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স (এইমস)-এর প্রধান ডক্টর রণদীপ গুলেরিয়া। তাঁর বক্তব্য, সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি এখন টাকা দিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল থেকেও করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে সকলকে টিকা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ডোজ সরকারের কাছে নেই। সুস্থসবল, কমবয়সিদের থেকে বয়স্ক, ক্রনিক অসুখে ভোগা রোগীদের প্রাধান্য দেওয়া হোক, কারণে সংক্রমণে মৃত্যুর ঝুঁকি এদেরই বেশি। গুলেরিয়া বলছেন, ১৮ বছরের পর থেকে কমবয়সিদের টিকা দিতে হলে মোট ৯০ কোটি বা তার বেশিজনকে ডোজ দিতে হবে। ভ্যাকসিনের দুটি করে ডোজের হিসেবে তাহলে ২০০ কোটির কাছাকাছি ডোজ দরকার পড়বে। এই বিপুল পরিমাণ উত্পাদন এখনও দেশে হয়নি। এদিকে কোভিড সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করতে হলে, হাই-রিস্ক গ্রুপের মানুষজনকে আগে টিকার ডোজ দিতে হবে। এই হাই-রিস্ক গ্রুপে কারা পড়ছেন? গুলেরিয়ার কথায়, ৬০ বছরের ওপর প্রবীণ, ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কোমর্বিডিটির রোগী যাদের শরীরে দীর্ঘদিন ধরে কোনও ক্রনিক রোগ বাসা বেঁধে আছে তাঁদের সংক্রমণজনিত রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি। হাইপ্রেশার, ডায়াবিটিস, হৃদরোগ, ফুসফুসের সমস্যা বা কিডনির জটিল রোগ রয়েছে এমন মানুষজনকে টিকাকরণের প্রথম তালিকায় রাখতে হবে। তাছাড়া যাঁরা খুব বেশি ধূমপান করেন, বিভিন্ন কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, ক্যানসারের চিকিত্সা চলছে, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস, লুপাস, মাল্টিপল স্কেলরোসিস বা ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ তথা আলসারেটিস কোলাইটিস বা ক্রোনস ডিজিজ আছে এমন রোগীদের প্রাধান্য দিতে হবে।
ডাক্তার গুলেরিয়ার বক্তব্য, কমবয়সিদের তালিকার বাইরে রাখার কথা বলা হচ্ছে না, তবে এখনই তাঁদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা ঠিক হবে না। কমবয়সি যাদের শরীরে কোনও ক্রনিক রোগ নেই, তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই বেশি। আলাদা করে ইমিউন বুস্টারের এখনই দরকার নেই। কিন্তু প্রবীণ ও কোমর্বিডিটির রোগীদের টিকার ডোজ দিলে শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধক অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। দেশে ৬৫ শতাংশের ওপর কোমর্বিডিটির রোগী রয়েছে। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়লে সংক্রমণ ছড়ানোর হারও কমবে।