Today Kolkata:- রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলে কী কী কাজে তাদের ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তারই প্রেক্ষিতে সার্কুলার জারি করল রাজ্য পুলিশ। সেখানে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলাজনিত কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না।
রাজ্য পুলিশের তরফে সার্কুলার জারি করে জানিয়ে দেওয়া হল আজ, কোন কোন কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে। স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। বিভিন্ন জায়গায় ভিড় সামলাতে, উৎসবের সময় ভিড় সামলাতে, বেআইনি পার্কিং রুখতে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে সাহায্য করবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা।
রাজ্য পুলিশের দেওয়া সার্কুলারে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলাজনিত কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না। এই সিভিক ভলান্টিয়ার গড়ে তোলার কাজ শুরু হয় তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে। এই মুহূর্তে রাজ্যে প্রায় একলক্ষ সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে। পুলিশকে সাহায্য করার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের প্রায় সব কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠে।
২০২২-এর শুরুর দিকে হাওড়ার আমতা থানার সিভিক ভলান্টিয়ার ছাত্র নেতা আনিস খানের বাড়িতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল। তাদের কারণেই আনিস খানের অপমৃত্যু বলে অভিযোগ করেছিলেন আনিস খানের বাবা সালেম খান। পুলিশের তরফে আদালতে সালেম থানের বাড়িতে সিভিক ভলান্টিয়ার পাঠানোর কথা স্বীকারও করেও নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সরশুনা থানা এলাকায় এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই যুবককে আর খুঁজে না পাওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সেই যুবকের পরিবার।
বড় অভিযোগ হল, প্রায় সব সিভিক ভলান্টিয়ার হল তৃণমূলের ক্যাডার। এছাড়া তাঁদের কোনও প্রশিক্ষণও নেই। উল্লেখ করা প্রয়োজন সাম্প্রতিক সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ভাল কাজ করলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুরস্কার দেওয়া হবে। তাদের কনস্টেবল পদে নিয়োগের চিন্তাভাবনার কথাও জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য পুলিশকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দেয়। ২৯ মার্চের মধ্যে সেই গাইডলাইন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল হাইকোর্টের তরফে। তারপরেই রাজ্য প্রশাসনের তরফে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।