হুহু করে বাড়ছে নতুন স্ট্রেইনের করোনা। ৫ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আবার লকডাউনের পথে হাঁটছেন। সোমবার তিনি জানিয়ে দিলেন, আগামী ৬ সপ্তাহ পূর্ণ লকডাউন থাকবে ব্রিটেন। বন্ধ থাকবে স্কুল কলেজও।
দক্ষিণ ইংল্যান্ড থেকে নয়া স্ট্রেন প্রায় গোটা ব্রিটেনেই ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার আশঙ্কায় দেশজুড়ে ফের কড়া লকডাউন চালু করেছে বরিস জনসন সরকার। করোনা সংক্রমণে এ পর্যন্ত ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ব্রিটেনে। সংক্রমণের হার কমছে না। উল্টে নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, নয়া স্ট্রেন এতটাই সংক্রামক যে রাশ টানতে না পারলে দেশজুড়ে সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা আসতে পারে। আগামীকাল বুধবার থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কুল, কলেজও। আজ মধ্যরাত থেকে লকডাউন চালু হবে স্কটল্যান্ডে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, সোমবার অবধি সংক্রমণ নিয়ে ২৭ হাজারের বেশি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। করোনা অতিমহামারী প্রথম ছড়িয়ে পড়ার পরে যেভাবে সংক্রমণের হার বেড়েছিল, সে তুলনায় এখন সংক্রমণের হার প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ হাজার মানুষের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মনে করা হচ্ছে, অধিকাংশের শরীরেই করোনার নতুন স্ট্রেন রয়েছে। ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব ইংল্যান্ডে বেশি খেয়াল রাখা হচ্ছে। কতজনের মধ্যে নতুন ভাইরাল স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও এখনও সব তথ্য হাতে আসেনি। অনেক কোভিড রোগীকেই চিহ্নিত করা যায়নি। যেহেতু নতুন স্ট্রেন রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্টকেও ফাঁকি দিতে পারে, তাই সংক্রমণ ধরা পড়ে না অনেক সময়েই। করোনার নতুন প্রজাতি নিয়ে এখনও অবধি খুব বেশি তথ্য মেলেনি। বি.১.১.৭ স্ট্রেনে কিভাবে জিনগত বদল বা মিউটেশন হচ্ছে, সে নিয়ে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাতেই বোঝা গেছে, এই নতুন স্ট্রেন ৭০ শতাংশ দ্রুত গতিতে মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে। অর্থাত্ মানুষের শরীরে খুব তাড়াতাড়ি সংক্রামিত হতে পারে। করোনার নতুন স্ট্রেন ৫৬ শতাংশ বেশি সংক্রামক বলেও দাবি করেছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সেন্টার ফর ম্যাথেমেটিক্যাল মডেলিং এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন বের করেছে সায়েন্স জার্নালে। সেখানে গবেষকরা বলেছেন, নতুন স্ট্রেন যদি বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সংক্রমণে মৃত্যু বাড়বে, পাশাপাশি সংক্রমণজনিত জটিল রোগও ছড়াবে। হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলিতে রোগীর ভিড় আরও বাড়বে।