মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের তাণ্ডবে পর পর চার মৃত্যু৷ অভিযুক্তকে আটকাতে গিয়ে প্রাণ হারালেন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারও (Tripura Killing)৷ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ত্রিপুরার খোয়াই শহরে৷ নিহত পুলিশ আধিকারিকের নাম সত্যজিৎ মল্লিক৷ তিনি খোয়াই থানার সেকেন্ড ইন্সপেক্টর৷ সবমিলিয়ে ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ওই পুলিশ আধিকারিক সহ পাঁচ জনের৷
জানা গিয়েছে, এ দিন উত্তর রামচন্দ্রঘাটের শেওড়াফুলি এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ দেবরায় নামে এক যুবক বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিল। শুক্রবার আচমকাই উত্তেজিত হয়ে পড়ে সে। প্রথমে শাবল দিয়ে নিজেরই দুই মেয়ে ইন্দিরা (৭) এবং অদিতিকে (১) খুন করে প্রদীপ৷ নিজের দাদা অমলেশ দেব রায়কেও (৪০) গুরুতর জখম করে খুন করে ওই যুবক৷
এর পর স্ত্রী মীনা পাল দেবরায়কেও জখম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় প্রদীপ৷ রাস্তায় বেরিয়েও নির্বিচারে পথচলতি মানুষকে শাবল দিয়ে আঘাত করতে শুরু করে প্রদীপ৷ সেই সময় ওই রাস্তা দিয়ে অটোয় চড়ে যাচ্ছিলেন কৃষ্ণ দাস (৫৪) এবং তাঁর ছেলে করণবীর৷ তাঁদের উপরেও হামলা চালায় প্রদীপ৷ ঘটনাস্থলেই মারা যান কৃষ্ণ দাস (৩৪)৷
খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন খোয়াই থানার সেকেন্ড অফিসার সত্যজিৎ মল্লিক৷ সত্যজিৎবাবু ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই উন্মক্ত অবস্থায় তাঁকেও এলোপাথারি কোপাতে শুরু করে প্রদীপ।
সত্যজিৎবাবুকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন আরও বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী এবং সাধারণ মানুষ৷ কোনওক্রমে প্রদীপকে নিরস্ত করে তাঁকে আটক করে পুলিশ৷ গুরুতর আহত অবস্থায় সত্যজিৎবাবু সহ বাকি আহতদের প্রথমে খোয়াই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ রাতেই সত্যজিৎবাবুকে আগরতলার জি বি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ কিন্তু সেখানেই মৃত্যু হয় সত্যজিৎবাবুর৷
অভিযুক্তের স্ত্রী মীনা দেব রায়কেও জি বি হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে৷ নিহত পুলিশ আধিকারিক সত্যজিৎ মল্লিককে ত্রিপুরা পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়৷ খোয়াই থানায় উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা পুলিশের ডিজি-ও৷
এ দিনই অভিযুক্ত প্রদীপ দেব রায়কে আদালতে পেশ করে পুলিশ৷ অভিযুক্ত প্রদীপ সব অভিযোগই স্বীকার করেছে৷ তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩০৭, ৩২৬, ৩৩৩, ৩৫৩ এবং ৪২৭ (এ) ধারায় মামলা দায়ের করছে পুলিশ৷ অভিযুক্তের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ ঘটনায় স্তম্ভিত খোয়াই সহ গোটা ত্রিপুরা৷