চৈত্রের দাবদাহ, করোনার আতঙ্ক, মানুষের আশা আশঙ্কার দোলাচলের মধ্যেই গ্রাম থেকে শহরে ছুটে বেড়াচ্ছেন ঝকঝকে একঝাঁক তরুণ মুখ।
‘আমার একটাই প্রতিপক্ষ— গরম। আর কেউ বা কিছু না।’ বক্তা সংযুক্ত মোর্চার সিঙ্গুরের প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। বছর এখনও তিরিশ ছোঁয়নি, গবেষণা করার ইচ্ছেতে কিছুটা এগিয়েও রাজনীতির টানে গা ভাসিয়েছেন। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন গত তিন বছর ধরে। স্পষ্ট জানাচ্ছেন, সিঙ্গুর থেকে একটা প্রজন্মের স্বপ্ন ভাঙা হয়েছিল। যন্ত্রণাক্লিষ্ট সেখানকার মানুষ। সেখানে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে বুঝতে পারছেন, চাপ আছে, তবে সেটা সামলে নেওয়ার ক্ষমতাও তাঁদের আছে বলে আশাবাদী সৃজন।
সিঙ্গুর প্রসঙ্গে সৃজনের মন্তব্য, ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যেরা ঠিকই বলেছিলেন, ঠিক পথেই চলেছিলেন সেই সময়ে। হতে পারে বাস্তবায়নে কোথাও ত্রুটি ছিল, তবে উদ্দেশ্যে কোনও খাদ ছিল না। সে কারণেই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে সিঙ্গুরের মাটিতে এখন দেখা যাচ্ছে। কারণ উনি বুঝেছেন পায়ের তলার জমি আলগা হয়ে গেছে।’
নিজের কমরেডদের সপক্ষে সৃজন বলছেন, গত দশবছর ধরে যে অত্যাচারের বিরুদ্ধে যুঝে চলেছেন তাঁরা, অন্য দল হলে উঠে যেত। লাল পার্টি বলেই এখনও দাঁড়িয়ে আছে। নির্বাচন বামপন্থীদের কাছে একটা দলগত প্রয়াস। কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি-নির্ভর নয়। ভোটে না দাঁড়ালেই সেটা বৃদ্ধদের দল হয়ে যায় না বলেই দাবি সৃজনের। তাই ‘বৃদ্ধদের দল’ এই অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। অন্যদলের প্রার্থীদের প্রতি তাঁর হালকা খোঁচা, সেখানে জাত গোখরো আছে, বাঘের বাচ্চা আছে। বামেদের আছে অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশেল।
সৃজনের কথায়, এবারের লড়াই আসলে প্রবণতার বিরুদ্ধে। কাটমানি, তোলাবাজি, দলবদল এমন কিছু প্রবণতা। এগুলোর বিরুদ্ধেই লড়ছেন সৃজন। সিঙ্গুরের প্রতারিত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে তত্পর এই যুবক সিঙ্গুরবাসীর কণ্ঠস্বর গোটা পৃথিবীর সামনে তুলে আনতে চান। সিঙ্গুরবাসী পরিত্রাণ চান সর্বিক অবনমন থেকে, আর তাঁদের জন্যই এবার দমকা বাতাস হয়ে উঠতে বদ্ধপরিকর সৃজন।