More
    Homeঅনান্যপৃথিবীর শীর্ষ ১০টি ব্যয়বহুল খাবার

    পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি ব্যয়বহুল খাবার

    Today Kolkata:- পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি ব্যয়বহুল খাবার

    ১। ওয়াগু গরুর মাংস

    আপনি যদি মাস্টারসেফ অস্ট্রেলিয়া দেখে থাকেন, তাহলে আপনি অবশ্যই ওয়াগু গরুর মাংসের কথা জানবেন। কেবল জাপানি গরুর মাংসকেই ‘ওয়াগু বিফ’ বলা হয়। জাপানের চারটি ভিন্ন প্রজাতির গরুর থেকে এ মাংস পাওয়া যায়। এ গরুর মাংস চর্বিবহুলতার জন্য বিখ্যাত।

    এছাড়াও এ মাংস আর্দ্র, কোমল যা মুখে দিলে গলে যায়। এর দাম এত বেশি হওয়ার কারণ, এসব গরু প্রতিপালনে খরচ অনেক। ওয়াগু মাংস হিসেবে গণ্য হওয়ার জন্য কঠোর নিয়ম-নীতি মেনে এই গরুগুলোকে পালতে হয়। যাতে তাদের পেশীর পরতে পরতে চর্বি জমে, সেজন্যে বাছুরগুলোকে একেবারে শুরু থেকেই বিশেষ ধরনের খাবার খাওয়ানো হয়। জাপানে সবচেয়ে দামি ওয়াগু বিফ হচ্ছে ‘কোবে বিফ’। যার প্রতি কেজির দাম ৬৪০ ডলার।

     

     

    ২। জাফরান

    জাফরান এক ধরনের সিজনিং, যা প্রায় সব ধরনের ভারতীয় বিশেষ অনুষ্ঠানে খাবার রান্নায় ব্যবহার করা হয়।  তবে ভারতীয়রা খুব বুঝেশুনে এটি ব্যবহার করে। কেননা মাত্র এক কেজি জাফরান সংগ্রহ করতে তিন লাখেরও বেশি ফুল সংগ্রহ করতে হয়। যে ফুল থেকে এই জাফরান সংগ্রহ করা হয়, শরতের শুরুতে মাত্র এক সপ্তাহের জন্য সেটি ফোটে।

     

    ইরানি জাফরান পৃথিবীর সবচেয়ে দামী মশলার একটি। এই জাফরানের দাম প্রতি কিলোগ্রাম ৪০০ ডলার। এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল হল জাফরানের প্রধান উৎস।

     

     

    ৩। কোপি লুয়াক

    কোপি লুয়াক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল কফি। এটি গোল্ডেন কফি বিন থেকে তৈরি করা হয়, যা এশিয়ান পাম সিভেট নামের বিড়ালের মল থেকে সংগ্রহ করা হয়। এটি এক ধরনের ছোট বিড়াল, যা এশিয়ার কিছু অংশে বাস করে। যে কফি বিন থেকে এই কফি তৈরি হয়, সেই বিনগুলোকে এশিয়ান পাম সিভেট নামের বিড়ালকে খাওয়ানো হয়। পাম সিভেট এই কফি বিনগুলো খাওয়ার পর সেগুলো তার পাকস্থলীর এসিডে জারিত হয়।

    এরপর বিড়ালের মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে এই কফি বিন। সেই বিন থেকে তৈরি হয় কফি। এর প্রতি পাউন্ডের জন্য আপনাকে গুনতে হবে প্রায় ৬০০ ডলার।

     

     

    ৪। মুজ পনির

    পনির সবসময়ই সবচেয়ে ব্যয়বহুল দুগ্ধজাত পণ্য। তবে মুজ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পনির, কারণ এটি মুজ দুধ দিয়ে উৎপাদিত হয়।

    শুধুমাত্র সুইডেনে মুজ পনির প্রক্রিয়াজাত করা হয় ও পাওয়া যায়। প্রতি কিলোগ্রাম মুজ পনির প্রায় এক হাজার মার্কিন ডলার। এই পনির এত ব্যয়বহুল, কারণ মিল্কিং মুজ তৈরি মোটেই সহজ কাজ নয়।

    সুইডেনের জুরহোমের দুই বোন ‘এলজেনস হুস’ নামের একটি খামার পরিচালনা করে, যা এই পনিরের বৃহত্তম ও প্রধান উৎপাদক।

     

     

    ৫। সাদা ট্রাফলস

    সাদা ট্রাফল এক ধরনের ভূগর্ভস্থ ছত্রাক, যা ইউরোপে পাওয়া যায়। ইউরোপের জলবায়ু সাদা ট্রাফলগুলোর জন্মানোর উপযুক্ত স্থান, কেননা এগুলো বৃদ্ধির জন্য খুব নির্দিষ্ট পরিবেশ ও জলবায়ুর প্রয়োজন হয়।

    ট্রাফল হলো এক ধরনের বিরল প্রজাতির তীব্র সুগন্ধ যুক্ত মাশরুম। এর ফ্রুট বডির শরীর অমসৃণ ও অ-সমতল, যা দেখতে অনেকটা আলুর মত। চওড়া পাতা ও ক্যালক্যারিয়াস সমৃদ্ধ বন্য পরিবেশে বসন্তকাল ও বর্ষাকালে এই মাশরুম জন্মায়। এটা মাটির নিচে হয় বলে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়না।

    এ মাশরুম অনুসন্ধানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পোষা কুকুর বা শুকর ব্যবহার করা হয়।

    একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৯৮২ সালে ফ্রান্সে এক হাজার মেট্রিক টন ট্রাফল সংগ্রহ করা হয়েছিল, যা বর্তমানে নেমে দাঁড়িয়েছে ৫০-৯০।

     

     

    ৬। মাতসুতাক মাশরুম

    মাতসুতাক জাপানের তাম্বা অঞ্চলে জন্মানো এক ধরনের মাশরুম। এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মাশরুমগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত। বিশেষ মিষ্টি ও মশলাদার স্বাদের জন্য এই মাশরুমগুলো বিখ্যাত।

    এই মাশরুমগুলো শরৎকালে বছরে মাত্র একবার কাটা হয় এবং জাপানিদের মধ্যে সুস্বাদু খাবার হিসেবে এটি বিখ্যাত।

     

     

    ৭। আয়াম সিমানি কালো মুরগি

    আয়াম সিমানি কালো মুরগি বা গথ চিকেন ইন্দোনেশিয়ায় প্রজনন করা হয়। এগুলোর পালক, মাংস ও জিহ্বা সবকিছুই একেবারে কালো। শুধুমাত্র এর রক্ত লাল।

    এই ধরনের মুরগি অত্যন্ত বিরল। ইন্দোনেশিয়ায় এই মুরগিটি মোটামুটি সস্তা ও পরিচিত হলেও, অন্যান্য দেশে এগুলো হাজার হাজার ডলারে বিক্রি হয়। এটি স্পোর্টস চিকেন নামেও বিখ্যাত।

     

     

    ৮। কালো তরমুজ

    ডেনসুক ব্ল্যাক তরমুজ বা কালো তরমুজ শুধু জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে পাওয়া যায়।

    বিশ্বে প্রায় এক হাজার ২০০ প্রজাতির তরমুজ রয়েছে। তবে সবচেয়ে দামি তরমুজ বলা হয় এটিকে। ডেনসুক প্রজাতির এ তরমুজ বিক্রি হয় নিলামে।

    এছাড়া, বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফল মনে করা হয় ইউবারি মেলনকে (কালো তরমুজ)। এটি জাপানে উৎপন্ন হয়। এ তরমুজ এত ব্যয়বহুল যে এগুলো খোলা জায়গায় বিক্রি হয় না, প্রতি বছর এগুলো বিক্রির জন্য নিলাম করা হয়। ঐতিহ্যগতভাবে,কালো তরমুজ জাপানিদের বিয়ের একটি মূল্যবান উপহার বলে মনে করা হয়।

     

     

    ৯। সোয়ালোস নেস্ট স্যুপ

    সোয়ালোস নেস্ট স্যুপ বা চাইনিজ বার্ডস নেস্ট স্যুপ বিশ্বজুড়ে ভোজন রসিকরা পছন্দ করে। এই স্যুপটি সুইফলেট পাখির লালা থেকে তৈরি। এটি লাল, হলুদ ও সাদা তিনটি ভিন্ন রঙে পরিবেশন করা হয়।

    এর মধ্যে লাল পাখির বাসার স্যুপ সবচেয়ে দামি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে এই লাল পাখির বাসার এক বাটি স্যুপের দাম ১০ হাজার ডলার। কারণ এটি তিনটি জাতের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু।

    সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলি এই স্যুপটিকে একটি জাতীয় খাবার হিসাবে বিবেচনা করে।

     

     

    ১০। আলবিনো ক্যাভিয়ার

    আপনি যদি অভিনব ব্যয়বহুল খাবারের কথা ভাবেন, তবে আপনি ক্যাভিয়ারের কথা ভাবতে পারেন। ক্যাভিয়ার আসলে এক ধরনের সামুদ্রিক মাছের ডিম। বিশ্বের সবচেয়ে সুস্বাদু খাবারের একটি বলে গণ্য করা হয় এটিকে।

    এই ক্যাভিয়ার সংগ্রহ করে প্যাকেটে ভরে বাজারজাত করার কাজটি খুবই দুরূহ। তবে তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে ক্যাভিয়ার খুবই বিরল। সবচেয়ে বিখ্যাত ক্যাভিয়ার আসে বেলুজা স্টার্জেন মাছ থেকে।

    কেবলমাত্র কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরে এই মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু এই মাছ এখন বিপন্ন প্রায়। খুব কম মাছের ডিমই এখন বৈধভাবে কেনা-বেচা হয়।

    একটি বেলুজা ক্যাভিয়ার পূর্ণবয়স্ক হতে সময় লাগে প্রায় ২০ বছর। এরপরই কেবল এই মাছ ডিম পাড়তে পারে। কিন্তু এই মাছটিকে হত্যা করেই কেবল এর ডিম সংগ্রহ করা সম্ভব।

    গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের হিসেবে এক কিলোগ্রাম অ্যালবিনো ক্যাভিয়ারের সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ৩৪ হাজার ৫শ’ মার্কিন ডলার।
    বিশ্বের সবচেয়ে দামী ক্যাভিয়ার হল আলমাস, যা বিপন্ন ইরানি আলবিনো বেলুগা স্টার্জেন থেকে সংগ্রহ করা হয়।

    সুতরাং,হোয়াইট পার্ল অ্যালবিনো ক্যাভিয়ার পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল বৈচিত্র্য।

    আরও পড়ুন – শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে টলি-যোগ ? ইডি-র নজরে টলিউডের আরও পাঁচ অভিনেতা অভিনেত্রী

    মূলকথা

    এখন পর্যন্ত আমরা বিশ্বের শীর্ষ ১০ টি সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভোজ্য খাবারের তালিকা তৈরি করেছি। এখানে প্রতিটি খাবারের আনুমানিক মূল্য এক ডলার সমান ১০২ দশমিক ৭৩ টাকা এবং ১ থেকে ১.২৫ টাকা পর্যন্ত রূপান্তর হার অনুযায়ী হিসাব করা হয়েছে।

    এই খাবারগুলির প্রতিটিই বিরল। এগুলো উৎপাদন, প্রজনন বা চাষ করা কঠিন। এই তালিকার প্রতিটি খাবারের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে অত্যধিক দাম যদিও এই খাবারগুলোর অসাধারণ স্বাদ বা পুষ্টির মান নিশ্চিত করতে পারে না, তবুও বিশ্বজুড়ে খাদ্যরসিকদের এই ব্যয়বহুল খাবারগুলো সম্পর্কে কৌতূহলের শেষ নেই। পৃথিবীর শীর্ষ

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments