চলন্ত লোকাল ট্রেনের সফরে রবীন্দ্র সংগীত সবারই ভালো লাগে। সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তা দিয়ে রেলের লক্ষ্মীলাভ হয়নি। কয়েকবছর আগে বিজ্ঞাপনবিহীন অডিও সিস্টেমে লোকাল ট্রেনে লাগানো হয়েছিল শুধুই যাত্রী বিনোদনের জন্য। ট্রেনে সফরের মাঝে যদি গান শোনা যায়, তাহলে সফরের ধকল অনেকটাই হালকা যেমন হয়ে যায়, তেমনই মনো ভালো হয়ে যায়। খুব অল্প সময়ে যেন পথও অতিক্রম হয়ে যায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে রেলকে অনেকটাই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এবার সেই ক্ষতি কাটাতে চায় কর্তৃপক্ষ। তাই বিকল্প পথ বেছে নিয়েছে রেল। এবার লোকাল ট্রেনের প্রতি কামরায় বসানো হবে টিভি।
যাত্রাপথেই ভরপুর বিনোদন! লোকাল ট্রেনের প্রতি কামরায় টিভি বসিয়ে আয়ের নতুন পথ রেলের
Read More-বেসরকারি স্কুলগুলির ফি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমা ধার্য করল কলকাতা হাইকোর্ট
জানা গিয়েছে, লোকাল ট্রেনের কামরায় টিভিতে সোশ্যাল মেসেজের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের প্রচার হবে। এছাড়াও স্বল্পদৈর্ঘ্যের নান্দনিক বিষয়ও দেখতে পারবেন যাত্রীরা। হাওড়ার ডিআরএম মণীশ জৈন জানান, এজন্য টেন্ডার ডাকা হচ্ছে। আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে হাওড়া ডিভিশনের লোকাল ট্রেনের কামরাতে এই টিভির দেখা মিলবে। প্রচারের বিষয়গুলি হবে প্রি-রেকর্ডেড। সেগুলি চালক ও গার্ডের কামরা থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। এর ফলে যাত্রীদের বিনোদনের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের দৌলতে রেলের কোষাগারে কিছুটা টাকাও আসবে।
Read more-‘পরিযায়ী সহায়’ প্রকল্পের আওতায় রেশন কার্ড না থাকলেও প্রতি মাসে ফ্রিতে ৫ কেজি খাদ্য সামগ্রী
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনগুলিতে এই টিভি প্রথম চালু হয়। আর এবার দেশের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে সৌভাগ্যবান যাত্রী হাওড়া ডিভিশনের যাত্রীরা, যাঁরা ট্রেনে বসে এই টিভি দেখার সুযোগ পাবেন। ট্রেনে প্রথম বিনোদনমূলক অডিও চালু হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। হাওড়া-দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসে। সেতার, সরোদ, গিটারের মতো বাদ্যযন্ত্রের সুর বাজানো হত। এরপর বিভিন্ন রাজধানী এক্সপ্রেসেও তা চালু হয়। পরে সাধারণ মেল, এক্সপ্রেসের মধ্যে প্রথম গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসে অডিওতে বাজতে শুরু করে রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি।
আবার সাম্প্রতিক কালে লোকাল ট্রেনেও চালু হয়েছে মিউজিক সিস্টেম। তবে, বাণিজ্যিকভাবে লোকালে টিভি চালু হচ্ছে পূর্বাঞ্চলে এই প্রথম। এই বিষয়ে মণীশ জৈন বলেন, ‘হাওড়া ডিভিশনের ৫০টি রেকের সব কামরাতে এই টিভি লাগানোর জন্য টেন্ডার ডাকা হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থা চাইলে রেক ভাগে ভাগে নিতে পারবে।’ রেলের এই সিদ্ধান্তে একদিকে যেমন মনে করা হচ্ছে যাত্রীদের বিনোদন হবে, তেমনই একইসঙ্গে টিভিতে বিজ্ঞাপন চালিয়ে করোনাকালে কিছুটা অতিরিক্ত আয়ও করতে পারবে রেল।