শতবর্ষের ডার্বি ম্যাচে পরাস্ত ইস্টবেঙ্গল। গতবার তাদের ক্লাবের শতবর্ষে তাদের দিন ভাল যায়নি, মাঠ ও মাঠের বাইরে তারা লজ্জার শিকার হয়েছে। ভাবা গিয়েছিল, এ মরসুমে নতুন করে শুরু করবে লাল হলুদ দল। কিন্তু এবার শতবর্ষের ডার্বিতে তারা শনিবার এটিকে-মোহনবাগানের বিপক্ষে ০-৩ গোলে আত্মসমর্পন করল।
ম্যাচের মাত্র ২২ মিনিটের মধ্যেই তিন গোল হজম করে ইস্টবেঙ্গল, তারপর তারা গোলের সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। এই হার তাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। বরং এটিকে-মোহনবাগান দেখাল তাদের রিজার্ভ বেঞ্চও তৈরি। বিরতির পরেও তারা তিনটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল, তা কাজে লাগালে আরও ব্যবধান বাড়তে পারত। চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠেছে, ১৯৭৫ সালের রেকর্ড। নয়া প্রজন্ম শুনেছে এতদিন সেই ম্যাচের গল্প। ওই ম্যাচে মোহনবাগান ০-৫ গোলে চূর্ণ হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের কাছে। সবুজ মেরুনের হয়ে ৫টি গোল হজম করেছিলেন ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়। পরে সেই ভাস্কর নিজের কামব্যাক করে হয়ে উঠেছিলেন ভারতের সেরা গোলরক্ষক।
শনিবার গোয়ার তিলক ময়দানে বারবার আলোচনায় উঠে এসেছে সেই ম্যাচের কথা। কারণ লাল হলুদের গোলরক্ষক অরিন্দম ভট্টচার্য একাই তিন গোল খেয়েছেন নিজের ব্যর্থতায়। মাত্র ২২ মিনিটের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল ৩-০ গোলে পিছিয়ে গিয়েছে তাঁর কারণেই। যদিও অরিন্দমকে তুলে নেন কোচ, তাঁর বদলে গোলরক্ষা করতে নামেন শুভম সেন। দুরন্ত এটিকে-মোহনবাগান। বড় ম্যাচে ২৩ মিনিটের মধ্যে তিন গোল দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে হাবাসের দল। প্রথম গোলটি করলেন রয় কৃষ্ণ, ১১ মিনিটে প্রীতম কোটালের পাস থেকে গোল করেছেন রয় কৃষ্ণ। দুই মিনিটের মধ্যেই আবার ব্যবধান বাড়িয়েছেন মনবীর সিং। অরিন্দমের ভুলে ফের তৃতীয় গোল হজম করেছে লাল হলুদ দল। লিস্টন কোলাসোর শট এগিয়ে এসে ধরতে গিয়েই ডুবিয়েছেন অরিন্দম। তাঁকে এটিকে-মোহনবাগান ছেড়ে দিয়েছিল, তাঁকেই আবার দলের নেতা করেছেন স্প্যানিশ কোচ। সব থেকে বড় কথা, পুরো ম্যাচে খেলা ধরতেই পারেনি ইস্টবেঙ্গল। তাদের কোচ ম্যানুয়েল দিয়াজ কী প্র্যাকটিস করালেন দলকে, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। দলের বিদেশী নির্বাচন এবারও ভাল হয়নি। একমাত্র পেরোসেভিচ ছাড়া কেউ বলার মতো নয়। চিমাকে অতি সাধারণমানের ফুটবলার মনে হয়েছে। তিনি ৫৮ মিনিটে মাঠে নেমে একটি হেড দেওয়া ছাড়া কিছুই করে উঠতে পারেননি। এটিকে-মোহনবাগান পাঁচ গোলের নজির স্পর্শ করে ফেলতে পারত। তা হয়নি কাউকো ও মনবীর সিং মিস করায়। তাদের কোচ হাবাস দেখালেন কেন তিনি সেরা কোচ, তিনি তাস লুকিয়ে রাখতে জানেন। কাউকোও বোঝালেন তিনি ইউরো কাপের মঞ্চের ফুটবলার।