সংঘাত ভুলে প্রোটোকল মেনে রাজভবনের চা–চক্রে যোগ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল ঠিক চারটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছন। রাজ্যপালের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় তাঁর। ওই চা–চক্রে আমন্ত্রিত বিভিন্ন মহলের বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে দেখা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। কথাও বলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজিও।
মুখ্যমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। প্রায় ৪৫ মিনিট সেই চা–চক্রে শরিক হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রবল সংঘাতের পরেও প্রশাসনিক সৌজন্য বজায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে যান। নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজভবনে চা–চক্রের আয়োজন করেন রাজ্যপাল। চলতি বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
উল্লেখ্য, জাতীয় ভোটার দিবসে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় টুইটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিলেন। টুইটে রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। রাজ্যে নিরপেক্ষ ভোট করানোর জন্য পুলিশ প্রশাসনকে তৎপর হওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। গত কয়েকমাসে রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত একাধিকবার চরম পর্যায়ে গিয়েছে।
সকালে অবশ্য রেড রোডে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানেও রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় মুখ্যমন্ত্রীর। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে নালিশ জানিয়ে এসেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। জেপি নড্ডার উপর হামলার ঘটনার পর রীতিমতো মুখ্যমন্ত্রীকে হুমকি দিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বলেছিলেন, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী সংবিধানের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল ধনখড়।
রাজভবন–নবান্নের মধ্যে চিঠি চালাচালি কিংবা টুইট যুদ্ধ নতুন কোনও বিষয় নয়। অনেক ক্ষেত্রে একাধিক অভিযোগে শীর্ষস্থানীয় প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের তলবও করেছেন রাজ্যপাল। তবে কেউ দেখা না করায় সংঘাত আরও বেড়েছে। রাজ্যপাল আদতে গেরুয়া শিবিরের সমর্থনে কাজ করছেন বলেই শাসক শিবিরের অনেকেই অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি সংঘাত এতটাই গভীর হয় যে রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে সরব হয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। এই প্রেক্ষাপটে সাধারণতন্ত্র দিবসে ঘুচল সংঘাত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।।