বড় ধাক্কা গেরুয়া শিবিরে। শনি দুপুরে রীতিমত চমক দিয়ে নিজের ঘরে তারকা প্রার্থী নিল তৃণমূল। আসানসোলের সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় যোগ দিলেন তৃণমূলে।
BREAKING: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বাবুল সুপ্রিয়
Read More-ইডি-র সমনের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ সস্ত্রীক অভিষেক ব্যানার্জি
সূত্রে জানা গিয়েছিল বেশ কয়েকবার বাবুলের কাছে তৃণমূলের তরফেই প্রস্তাব গিয়েছিল বিজেপি ছেড়ে জোড়াফুলে যোগদান করেননি। কিন্তু বাবুল প্রতিবারই সেই প্রস্তাব ফিরিয়েছেন। এমনকি একুশের নির্বাচনে বিজেপির গোহারান হারের জেরে বাবুলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব চলে যাওয়ার পরে পরেই প্রকাশ্যেই বাবুলের কাছে প্রস্তাব গিয়েছিল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু বাবুলও প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন না। এমনকি তিনি পরে রাজনীতিতে থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা বললেও এটাও জানিয়েছিলেন তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন না। অথচ এদিন কলকাতায় এসে ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বাবুল। কার্যত তাঁরা রাতারাতি এই অবস্থান পরিবর্তনে বড়সড় ধাক্কা খেয়ে গেল গেরুয়া শিবিরে। বিশেষ করে ভবানীপুর সহ রাজ্যের ৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের আগে বাবুলের এই জার্সি বদল বেশ ভালই ধাক্কা দিতে চলেছে বিজেপিকে।
একটা সময় ছিল, যখন বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে উপর্যুপরি মানহানির মামলা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবুল বলতেন, ওসব মামলার কাগজ জমিয়ে রাখছি। দেখি না কত মামলা করতে পারে! শুধু কি তাই! তৃণমূলকে কটাক্ষ করছে টিএমছি বলতেন গায়ক-সাংসদ। সেই তিনি বাবুল সুপ্রিয় শনিবারের বারবেলায় যোগ দিলেন তৃণমূলে। তাও আবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। সেই খবর ব্রেকিং নিউজের মতো যখন তরঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন হয়তো তৃণমূলেরই অনেকে বিশ্বাস করতে পারেননি, এমনও হতে পারে!
গানের জগতকে এক রকম বিদায় জানিয়েই বাবুল পা রেখেছিলেন রাজনীতির ময়দানে। প্রথমবার ভোট যুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী হয়েই নেমেছিলেন আসানসোলে। তাঁর হয়ে প্রচারে এসেছিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালের সেই ভোট যুদ্ধে বাংলা থেকে যে ২জন বিজেপি সাংসদ দিল্লি গিয়েছিল তাঁদের মধ্যে ১জন ছিলেন বাবুল। সেই সূত্রে হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীও। ২০১৯ সালেও ফের আসানসোলে জয়ী হন বাবুল। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন বাবুক এবার হয়তো কেন্দ্রে পূর্ণমন্ত্রী হবেন। কিন্তু সেই হিসাব মিলতে দেননি নরেন্দ্র মোদি। বাবুল তাঁর মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হয়েই থেকে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি তাঁকে নামিয়ে দিয়েছিল টালিগঞ্জের প্রার্থী হিসাবে। সেই যুদ্ধে বাবুল পরাস্ত হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যজুড়েও মুখ থুবড়ে পড়ে বিজেপি। তার পরে পরেই বাবুলকে সরিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে যা বাবুল ভালো ভাবে নেননি। সোজাসুজি জানিয়ে দেন সক্রিয় রাজনীতি থেকে তিনি সন্ন্যাস নিচ্ছেন। এটাও জানিয়েছিলেন তিনি তৃণমূলে যাবেন না। কিন্তু এদিন সেই অবস্থান থেকে সরে এসে নরেন্দ্র মোদির হাত ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরলেন তিনি।