করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতেই রাজ্যজুড়ে জারি হয়েছিল কঠোর বিধিনিষেধ। এরমধ্যে অন্যতম ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত। ফলে শীতের ভরা পর্যটন মরশুমে বিপাকে পড়েছিলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ উঠেছিল নিয়মের ফাঁক গলে বীরভূমের তারাপীঠে প্রশাসনের নির্দেশিকা অমান্য করেই হোটেলে বুকিং চলছিল।
এমনকি তারাপীঠের মন্দিরেও ভিড় হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে নড়েচড়ে বসেছিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। ধরপাকড় শুরু হতেই হোটেল ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। অবশেষে বৈঠকের পর তারাপীঠ ও শান্তিনিকেতনে হোটেল খোলার অনুমতি দিল জেলা প্রশাসন। তবে মাত্র ২৫ শতাংশ আবাসিক নিয়ে হোটেল খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় জানিয়ে দেন, মূলত শান্তিনিকেতন ও তারাপীঠকে কেন্দ্র করেই পর্যটকদের ভিড় থাকে। তাই রাজ্যের নির্দেশিকার উপর নজরদারি রেখে আমরাও হোটেলে ২৫ শতাংশ যাত্রী নিয়ে খোলার ছাড়পত্র দিয়েছি। নতুন নির্দেশিকা জারি হতেই খুশির হাওয়া তারাপীঠে। হোটেল ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি শান্তিনিকেতন ও তারাপীঠের সব হোটেল বন্ধের নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। কিন্তু সেসময় তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ জানিয়েছিল, অনলাইন বুকিং বন্ধ থাকলেও হোটেলে এসে বুকিং করা যাবে। কিন্তু পরে জেলা প্রশাসন সেটাও বন্ধ করে দেয়।
হোটেল মালিকদের বক্তব্য ছিল, গত দু’বছর ধরে করোনা বিধিনিষেধের জেরে বিদ্যুতের বিল, হোটেল কর্মীদের বেতন-সহ বিভিন্ন খরচ চালিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। তাই হোটেল পুরোপুরি বন্ধ করে পথে বসা ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে তারাপীঠের তৃণমূলের হোটেল ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের সম্পাদক সুনীল গিরি জানান, প্রতিটি হোটেল মালিককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোভিডবিধি মেনে, ডবল টিকার সার্টিফিকেট দেখে তবেই যেন হোটেলে থাকতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কীভাবে মিলল ছাড়? হোটেল মালিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, সম্প্রতি রাজ্য সরকার বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিতের সংখ্যায় ছাড় দেয়। সেই নিয়ম শিথিল হতেই হোটেল ব্যবসায়ীরা জেলাশাসককে আবেদন করেছিলেন। পরে ২৫ শতাংশ আবাশিক নিয়ে হোটেল চালু করার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। উল্লেখ্য, তারাপীঠে ছোট বড় প্রায় সাড়ে তিনশো হোটেল লজ আছে। এবং শান্তিনিকেতন এলাকায় প্রায় দেড়শো লজ, হোটেল, রিসর্ট আছে।