TodayKolkata :- সত্তরের দশকের উত্তপ্ত সময় আকছার এই ধরণের ঘটনা ঘটতো আগে। আবার সেও ধরণের হার হিম করা ঘটনা প্রত্যক্ষ করলো আমতার বাসিন্দারা। গভীর রাতে পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাড়িতে ঢুকে খুনের অভিযোগ উঠল আমতা থানা এলাকায়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার আমতার সারদা দক্ষিণ খাঁ পাড়া এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর মৃতের নাম আনিস খান। পুলিশের পোশাকে বাড়িতে এসে যুবককে খুনের অভিযোগ। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মৃত অনিশের পরিবারের অভিযোগ পুলিশের পোশাক পরিহিত ৪ জন লোক বাড়ির ভেতরে ঢুকে অনিশকে খুন করে। পরিবার সূত্রে খবর আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অনিশ আগাগোড়া কলকাতাতেই থাকতেন। তিন দিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। গতকাল সন্ধ্যাবেলা পাড়ার একটি জলসাতে যান। এরপরে গভীর রাতে সে বাড়ি ফেরে। তার বাড়ি ফেরার কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ চার জন লোক রাত ১ টা নাগাদ তাদের বাড়িতে আসেন। আই এস এফে
ওই চারজনের মধ্যে একজন পুলিশের পোশাক পরা থাকলেও বাকিদের শরীরে জলপাই রঙের পোশাক পড়া ছিল বলেই মৃতের পরিবার সূত্রে দাবি।তারা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গ্রিল ধরে জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছিল। দরজা ধাক্কার আওয়াজ শুনে অনিশের বাবা গেটের সামনে এসে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের আমতা থানার পুলিশ বলে দাবি করেন। তারা বলে তারা অনিশকে খুঁজছে। তারা বাবা জানায় অনিশ বাড়িতে নেই। তারা তার বাবাকে বলে তাদের কাছে খবর আছে কিছুক্ষন আগেই অনিশ বাড়ি ফিরেছে। তাই তারা থানা থেকে আসছে। তার সঙ্গে কথা বলার আছে। এরপর গ্রিল আর গেট খোলা হলে অনিশের বাবাকে পুলিশের পোশাক পড়া ব্যক্তি বন্দুক দেখিয়ে ওখানেই দাঁড় করিয়ে দেয়। এরপর বাকি তিনজন বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। তারা সিঁড়ি দিয়ে তিনতলায় উঠে আসে। তিনতলার সিঁড়ির ঘরের বারান্দার সামনে চৌকিতে বসে ছিল অনিশ।
এরপরই আর বিলম্ব না করে দ্রুত তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
তারা উপরে এসে অনিশের সঙ্গে ঝাপটা ঝাপটি করে তাকে ধরে তিনতলার বারান্দা থেকে নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। ফেলে দেওয়ার পরই তারা আবার সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নীচে নেমে ওই পুলিশের পোশাক পড়া ব্যক্তিকে স্যার বলে সম্বোধন করে।তারা ওই ব্যক্তিকে বলে ‘স্যার কাজ হয়ে গেছে’। এরপরই আর বিলম্ব না করে দ্রুত তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গভীর রাতে কিছু পড়ে যাওয়ার আওয়াজ শুনে পরিবারের অন্যান্য লোকেরা ছুটে এসে দেখে অনিশ বাবার পায়ের সামনে পরে যন্ত্রনাতে কাতরাচ্ছে। এরপরই তাকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
আই এস এফে যোগদান করাই কি কাল হলো অনিশের, তার অস্বাভাবিক মৃত্যুকে উত্তর খুঁজছে পরিবার।
কামারহাটি পৌরসভা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা
ঠিক কি কারণে তাদের ছেলের সঙ্গে এই ধরণের ঘটনা ঘটলো তা এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না তার পরিবারের লোকেরা। যদিও অনিশের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ যারা গতকাল রাতে এসেছিল তারা আদতে পুলিশ না অন্য কেউ এটা তদন্ত করে খোঁজ হোক অবিলম্বে। পাশাপাশি তাদের আরও অভিযোগ কি কারণে তাদের ছেলেকে এভাবে খুন করা হল তার তদন্ত চান তারা। পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা দাবি করেন এনআরসি আন্দোলন সহ বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিল না।অনিশের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত থাকার কথাও জানান পরিবারের সদস্যরা। অতি সম্প্রতি অনিশ আই এস এফ দলে যোগ দিয়েছিল। এই ধরণের এক অভূতপূর্ব ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাপা উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আমতা থানার পুলিশ। অনিশের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়াতেও সরব হয়েছে অনেক ব্যক্তি। সরাসরি শাসকদলকেই দায়ী করেছে তারা। যদিও শাসক দলের তরফ থেকে ঘটনা প্রসঙ্গে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।