একে একে অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা যোগ দিচ্ছেন রাজনীতিতে। এবার সেই রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কারণে অভিনয় থেকে বাদ পড়লেন ভারতীয় অভিনেতা কৌশিক কর।
ভারতীয় রাজনৈতিক দল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণে সৌরভ পালোধির পরিচালিত নাটক ‘ঘুম নেই’ থেকে বাদ পড়লেন কৌশিক কর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে এমনটাই লিখেছেন নাটকের পরিচালক সৌরভ পালোধি।
তবে কৌশিকের অভিযোগ, কোনো ফোন বা মেসেজ তার কাছে আসেনি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘চল ফোট’ লিখে কটাক্ষ করেছেন সৌরভ। লিখেছেন বিজেপিতে যোগ দেওয়াই অন্যতম কারণ।
কৌশিকের মতে, অভিনেতা হিসেবে তাকে বাদ দেওয়া হলে সেটা তার দুঃখ ছিল না, কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করাটাকে অপরাধ হিসেবে দেখানো হয়েছে, আর এতে অপমান করা হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে।
এ বিষয়ে সৌরভ পালোধি বলেছেন, কৌশিক খুব ভালো বন্ধু। কৌশিককে নাটক থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। যেহেতু বামমনস্করা সবাই একসঙ্গে মিলে এই নাটক তৈরি করেছিলেন, সেহেতু বাম ছাড়া অন্য মতাদর্শকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত একার নয়, দলের প্রত্যেকেরই এক মত।
ভারতীয় গণমাধ্যম কৌশিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ফ্যাসিজিম চলছে। শিল্প ও রাজনীতি এক নয়। আমরা এই ধরনের আচরণ করে পরের প্রজন্মকে কী শিক্ষা দিচ্ছি? ‘ঘুম নেই’ নাটকে এক মেহনতি মানুষের চরিত্রে অভিনয় করছিলেন কৌশিক কর। এই চরিত্রটিকে মঞ্চে কাস্তে হাতুড়ি হাতে অভিনয় করতে দেখা যায়, সেটাই কি তবে কারণ? বাম মনোভাবাপন্ন সকলেই তো আর কাস্তে হাতুড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান না!
এর আগে ৮ মার্চ বিজেপিতে যোগ দেন কৌশিক কর। কৌশিক বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন মঞ্চে চাষির চরিত্রে অভিনয় করেছি, চাষিদের অভাব অভিযোগ তুলে ধরেছি। কিন্তু একটা সময়ের পর মনে হচ্ছিল আমি ব্যর্থ অভিনেতা। নিজে মাঠে নেমে কাজ না করতে পারলে লাভ নেই। মুর্শিদাবাদে শ্বশুরবাড়ির কাছে এক জমিতেই মাছের চাষ করতে শুরু করি। কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আমি নিজেকে শুধু শিল্পী বা অভিনেতা নয়, আমি নিজেকে এগ্রিকালচারিস্ট বলি। আর আসল কথা হল একা থেকে কাজ করতে পারছিলাম না তাই একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হলাম।
তিনি বলেন, শুধু সৌরভ নয়, নবারুণ ভট্টাচার্যের ছেলে তথাগতও আমাকে বাদ দিয়েছেন। ‘অটো’ নাটকটি আমিই পরিচালনা করতাম। সেই নাটকের কপিরাইটও কিনেছিলাম, এখন তিনি কপিরাইট ফেরত চাইছেন। তাহলে কি সত্যিই শিল্পীদের কোনো জায়গা নেই? নাটকে কল্পনারূপ যা থাকে তা আজ বাস্তবে ফুটে উঠছে, খারাপ লাগছে। সৌরভ যোগাযোগ করেছিল আমার সঙ্গে, আমি ক্ষমাও করে দিয়েছি। কিন্তু বন্ধু হিসেবে। তবে ভারতীয় জনতা পার্টিকে করা অপমান আমি ভুলব না, তাই ইমোজি দিয়ে উত্তর দিয়েছি, কথা বলার ভাষা ছিল না।’