শুক্রবার, (২৯শে অক্টোবর) বিখ্যাত কন্নড় অভিনেতা পুনীত রাজকুমারের আকস্মিক মৃত্যু সমগ্র চলচ্চিত্র জগতে শোকের আবহ তৈরি করেছে। এই অভিনেতা মাত্র ৪৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অভিনেতাকে বেঙ্গালুরুর বিক্রম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়।
তাঁর মৃত্যুর পর, কর্ণাটকের চামরাজনগর জেলার হানুর তালুকের মারুরু গ্রামের একজন ৩০ বছরের ব্যক্তি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। মৃত ব্যক্তি একজন কৃষক ছিলেন এবং স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে রেখে গিয়েছেন।
অভিনেতা পুনীত রাজকুমারের আকস্মিক মৃত্যু, শোকে আত্মহত্যা ভক্তের , হৃদরোগে মৃত আরও দুই
Read More-রাজ্যে পুনরায় চালু হবে লোকাল ট্রেন পরিষেবা, কোন শাখায় কত ট্রেন? রইল তালিকা
গ্রামবাসীদের মতে, মুনিয়াপ্পা প্রয়াত অভিনেতার একজন ডাই-হার্ড অনুরাগী ছিলেন। পুনীত রাজকুমারের একটি সিনেমাও তিনি বাদ রাখেননি। এই অভিনেতার প্রতিটি সিনেমাই দেখেছেন কৃষক মুনিয়াপ্পা। প্রিয় তারকা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে তিনি মর্মাহত হন। জানা গিয়েছে, অভিনেতার স্বাস্থ্যের আপডেট দেখার সময় তাঁকে টেলিভিশনের সামনে কাঁদতে দেখা যায়। অভিনেতার মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বুকের ব্যাথা অনুভব করতে শুরু করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে পোন্নাচি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানকার চিকিত্সকরা মুনিয়াপ্পাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গিয়েছে, মুনিয়াপ্পা সাত বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে কাজ করছিলেন কিন্তু লকডাউনের পরে নিজের জন্মস্থানে ফিরে আসেন।পুনীতের অপর এক ভক্তও হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পরশুরাম দেমান্নানভার নামে অভিনেতার এই ভক্ত শিন্ডোলি গ্রামে, বেলাগাভিতে থাকতেন। তাঁকেও অভিনেতার অসুস্থার খবর শোনার পর টেলিভিশনের সামনে অঝোরে কাঁদতে দেখা গিয়েছে। এরপর পুনীত রাজকুমারের মৃত্যুর খবর ঘোষণা হতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। শুক্রবার রাত ১১টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পাশাপাশি এই তারকা অভিনেতার আরও একজন ভক্ত আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে কর্ণাটকের আরও এক ভক্তের আত্মহত্যার চেষ্টার খবর প্রকাশ্যে এসেছে, যিনি হাতের শিরা কেটে ফেলেছেন। মৃতদের মধ্যে একজন রাহুল গাদিভাদ্দার, যিনি শুক্রবার নিজের বাড়িতে পুনীতের ছবির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পরে আত্মহত্যা করেছেন। জানা গিয়েছে, নিজের বাড়িতে ফাঁসি দেওয়ার আগে তিনি পুনীতের ছবি ফুল দিয়ে সাজিয়েছিলেন।
হাতের তালু কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ৩৫ বছরের সতীশ। উদুপি জেলার শালিগ্রামার এই অটোরিকশা চালক বর্তমানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। তিনি হাতের শিরা কেটে ফেললে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়াত প্রিয় অভিনেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই এই কাজ করেছেন।
পুনীতকে তাঁর ভক্তরা আদর করে ’অপু’ বলে ডাকতেন। তিনি কিংবদন্তি অভিনেতা রাজকুমার এবং পার্বথাম্মার পুত্র। ২৯টিরও বেশি কন্নড় ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। একজন শিশু শিল্পী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করার পর ১৯৮৫ সালে ’বেট্টাডু হুভু‘-তে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী হিসাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি চালিসুভা মোদাগালু এবং ইয়েরদু নক্ষত্রগালুতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পীর হিসাবে কর্ণাটক রাজ্য পুরস্কারও জিতেছিলেন।