নাগাড়ে বৃষ্টিতে বন্যাবিধ্বস্ত (Flood) ঘাটাল (Ghatal)। জলভাসি একাধিক এলাকা। বেড়েছে নদীর জলস্তর। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট। জলযন্ত্রণার ছবি মর্মান্তিক হয়ে দেখা দিয়েছে নানা এলাকায়। বন্যার জলের তোড়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে দোতলা বাড়ি। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাছে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বছর ছয়েকের এক শিশুর।
নাগাড়ে বৃষ্টিতে বন্যাবিধ্বস্ত ঘাটাল, জলভাসি একাধিক এলাকা, ডুবে মৃত্যু শিশুর
শুক্রবার বেলার দিকে ঘাটালের মনসুকা চড়কতলা এলাকায় বন্যার জলের তোড়ে নদী গর্ভে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে একটি দোতলা বাড়ি। ওই বাড়ি লাগোয়ে একাধিক দোকান ছিল। সেগুলিও জলে ডুবে গেছে বলে জানা গেছে। বাড়ির মালিকের নাম রতন মণ্ডল। তিনি জানান, একটানা বৃষ্টিতে ঘাটালের বেশিরভাগ এলাকাই কার্যত জলের তলায়। গতকাল থেকেই ঝুমি নদীর জল বাড়ছিল। নদীর পাড় ছাপিয়ে জলের স্রোত প্রবল বেগে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছিল। জলের তোড়েই বাড়িটি ভেঙে পড়ে। তবে প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেই জানা গেছে। অন্যদিকে আরও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেছে ঘাটালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। গম্ভীরনগর এলাকা গতকাল থেকেই জলমগ্ন ছিল। তার ওপর নদীর জল ঢুকে গোটা এলাকাতেই বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
Read More-Durga Puja 2021: এবারও দুর্গাপুজোর মণ্ডপে দর্শকের প্রবেশে জারি থাকছে নিষেধাজ্ঞা, নির্দেশ হাইকোর্টের
এদিন বাড়ির সামনে জমা জলে নেমে তলিয়ে যায় বছর ছয়েকের একটি শিশু। স্থানীয়রা বলছেন, বাড়িঘরের বেশিটাই জলে ডুবে গেছে। বাচ্চাটা অসাবধানতা বশত বাড়ির বাইরে আসতে গিয়ে জলে তলিয়ে যায়। দ্রুত তাকে চিকিত্সকের কাছে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। গত তিন মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে এই নিয়ে তিন বার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল। এদিন ভোরে চন্দ্রকোনাতে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ১২টিরও বেশি গ্রাম। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অতি বৃষ্টির পাশাপাশি শিলাবতী, ঝুমি নদীর জলস্তর বেড়ে প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ অংশে। হুড়হুড় করে জল ঢুকছে গ্রামগুলিতে। চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়কের ওপরেও জল উঠতে শুরু করেছে। এদিকে জল ঢুকে পড়েছে ঘাটাল থানাতেও। এই অবস্থায় দরকারি কাগজপত্র নিয়ে থানা ছেড়েছেন পুলিশ কর্মীরা। ময়রাকাটা এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে আপাতত থানার কাজকর্ম চলছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একটানা বৃষ্টির ফলে জলমগ্ন আসানসোল-দুর্গাপুর। প্লাবিত হয়েছে বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অংশও। এমন অবস্থায়, পাঞ্চেত ও দুর্গাপুর জলাধার থেকে জল ছাড়া হয় বৃহস্পতিবার সকালে। যার ফলে এলাকার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘাটালে বৃষ্টি ও নদীবাঁধ ভেঙে বন্যা নতুন কিছু নয়। এ বছর অগস্টেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ঘাটালের বিস্তীর্ণ অংশে। তারপরে আরও একবার শিলাবতীর জল উপচে প্লাবিত হয়ে পড়ে ঘাটাল সংলগ্ন এলাকা। শিলাবতী এবং ঝুমি নদীতে জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে বলে সতর্কতা জারি হয়েছে।