একমাসের মধ্যেই সমস্ত মোহভঙ্গ। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে ‘দাদার অনুগামী’ পোস্টার পড়েছিল। নির্বাচন মিটতেই বেসুরো হয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গেরুয়া শিবিরে থেকে ঢিল ছুঁড়ছেন। যা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির কাছে। তা সত্ত্বেও এবার তাঁর বিরুদ্ধেই পড়ল ‘মীরজাফর’ লেখা পোস্টার। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্ট প্রসঙ্গে সমবায়মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অরূপ রায় বলেন, ‘কথায় বলে না, দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না। যখন মুখ্যমন্ত্রীর নামে বাজে কথা বলেছিল তখন ভাবা উচিত ছিল। এখন মিষ্টি, মধু মাখা কথা বলে আর লাভ নেই। অনেক সময় শয়তানরা (ডেভিল) চার্চে গিয়ে ভালো কথা বলে। তাতে তারা সৎ হয়ে যায় না।’ তারপরই এই পোস্টার কাণ্ড তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
তাহলে কী এই পোস্টার অরূপ অনুগামীদের কাজ? দলে কী ফিরিয়ে নিতে চাইছেন না রাজীবকে? উঠছে প্রশ্ন। ঠিক কী ঘটেছে? বুধবার সকালে ডোমজুড় বিধানসভার সলপ এলাকায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লাগানো হল এই পোস্টার। আর সেই পোস্টারে লেখা, ‘বাংলায় ও ডোমজুর এলাকায় মীরজাফর এবং গদ্দারের কোনও জায়গা নেই।’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে যেন কোনওভাবেই দলে ফেরানো না হয় তার জন্য তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছেও আবেদন জানানো হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এই পোস্টারের বিষয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
হাওড়া জেলায় অরূপ রায় বনাম রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন যে অহি–নকুল সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তা কারও অজানা নয়। এমনকী অরূপের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজীব। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতেই তাঁকে কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছিল হাওড়ার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়কে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অরূপ তখন বলেছিলেন, ‘রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দল ছেড়ে যেতে চাইলে, এখনই যেতে পারেন। তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও ক্ষতি হবে না। বরং লাভ হবে।’ এবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলে একের পরেক টুইট, ফেসবুক পোস্ট করছেন তখন পাল্টা পোস্টার কাণ্ড রাজীবের পথে কাঁটা তৈরি করল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।