তখন তীব্র গতিতে লাইন দিয়ে ছুটে আসছে ট্রেন। বাজানো হয়েছিল হুইসেলও। কিন্তু তা কানে পৌঁছয়নি। কারণ ওরা তখন ডুবে ছিল মোবাইল ফোনে। আর কানে হেডফোনের সঙ্গে চোখ ছিল মোবাইল স্ক্রিনে। ফলে কোনও ভ্রুক্ষেপ ছিল না। তারই মাশুল দিতে হল নিজেদের জীবন দিয়ে। ট্রেনে কাটা পড়ে একসঙ্গে মৃত্যু হল চার কিশোরের। ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল দেহ। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার ধুমডাঙ্গী স্টেশন এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাতে ওই চার কিশোর রেল লাইনের উপর দিয়ে কানে হেডফোন গুঁজে হেঁটে যাচ্ছিল। আর চোখ ছিল মোবাইল ফোনে। মোবাইল গেম পাবজি, ফ্রি ফায়ারের মতো খেলায় বুঁদ হয়েছিল তারা। আর ঠিক তখনই ডাউন লাইনে ছুটে আসছিল আগরতলা–দেওঘর এক্সপ্রেস। তা দেখতে পেয়ে অনেকে চিৎকার করছিলেন। ট্রেনও হুইসেল বাজিয়ে এগিয়ে আসছিল। কিন্তু তা ওই চার কিশোরের কানে কোনও কিছুই পৌঁছল না।
দেখা গেল, মুহূর্তের মধ্যে চলন্ত ট্রেনে কাটা পড়ে ছিন্ন বিচ্ছিন হয়ে যায় চারটি দেহ। ছুটে আসেন স্থানীয়রা। কিন্তু তখন আর কিছু করার নেই। রেল লাইন জুড়ে শুধুই রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহাংশ। খবর পেয়ে আসে রেল পুলিশও। মৃতরা প্রত্যেকেই চোপড়ার কোনাগছ গ্রামের বাসিন্দা। তবে তাদের পুরো পরিচয় এখনও অজানা।
এদিকে সরকারিভাবে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে রেল পুলিশ। এই পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ। চার কিশোরই মারা গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। অন্যদিকে কানে হেডফোন দিয়ে মোবাইল নিয়ে হাঁটা—সচেতন করার প্রয়াস বহুবার করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও যে সচেতনতা বিন্দুমাত্র বাড়েনি, এদিনের ঘটনা যেন তারই প্রমাণ।