বড়দিনে পার্ক স্ট্রিট, সল্টলেক- সহ কলকাতার অনেক এলাকায় মানুষের ভিড় দেখে আঁতকে উঠেছিলেন চিকিত্সকরা। মাস্ক ছাড়াই যেভাবে আনন্দে মেতেছিল তিলোত্তমা তাতে বর্ষবরণে কী হতে চলেছে সেটা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের আবেদন ছিল, আদালতকেই এই ভিড় নিয়ন্ত্রণে ফের হস্তক্ষেপ করতে হবে। হলও তাই। হাইকোর্ট জানিয়ে দিল বছর শেষে বর্ষবরণে যাতে কোথাও বাড়তি জমায়েত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে রাজ্য সরকারকে। প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাতে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় সবাই। এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেয়। সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব নজর রাখবেন যাতে কোনও জায়গায় জমায়েত না হয়। করোনা বিধি যাতে কোথাও না ভাঙে সেদিকে নজর রাখতে হবে প্রশাসনকে। আদালত এদিন জানিয়েছে, উত্সবের মরসুম শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বছর শেষে অনেক মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন। অনেক জায়গায় উত্সবের পরিবেশ। সংবাদমাধ্যমেও প্রতিনিয়ত এই ছবি ধরা পড়ছে। এভাবে জমায়েত করায় করোনা বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। এছাড়া এই জমায়েত থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও অনেক বেশি থাকছে। কারণ অনেক জায়গায় মাস্ক ছাড়াই অনেককে রাস্তায় বেরতে দেখা যাচ্ছে। তাই রাজ্য সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে, যাঁরা রাস্তায় বের হবেন তাঁরা যেন অবশ্যই মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার করেন। এছাড়া কোথাও যাতে জমায়েত না হয় তা শক্ত হাতে মোকাবিলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে। চলতি বছর দুর্গাপুজোর আগে ঐতিহাসিক নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। মণ্ডপের মধ্যে পুজো কমিটির সদস্যদেরও ঢোকায় বিধিনিষেধ ছিল। এমনকি অঞ্জলি দেওয়া থেকে শুরু করে বিসর্জন, সব ক্ষেত্রেই মানতে হয়েছে অনেক নিয়ম। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, আদালতের এই কড়াকড়ির ফলেই পুজোর মরসুমে বাংলায় যতটা সংক্রমণের আশঙ্কা করা হয়েছিল ততটা হয়নি। গত প্রায় মাসখানেক ধরে দেশে তথা রাজ্যে করোনার গ্রাফ নিম্নমুখী। আর তার জন্যই হয়তো মানুষের মধ্যে ভয় কিছুটা কমে গিয়েছে। নইলে বড়দিনে যে ছবিটা দেখা গিয়েছে তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ, অনেকেই মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরিয়েছেন। পুলিশের ধমকেও কাজ হয়নি। এই ঘটনার পরে অনেক মহল থেকেই সমালোচনা শোনা গিয়েছিল। উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রশাসনের আধিকারিকরাও। এবার যাতে বর্ষবরণে অন্তত তেমন ছবি না দেখা যায় তার জন্যই পদক্ষেপ নিল হাইকোর্ট।