রেল থাকবে ভারত সরকারের হাতেই। সংসদে এমনটাই জানালেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। আজ লোকসভায় রেলের অনুদান সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, রেল প্রত্যেক ভারতবাসীর সম্পত্তি। রেলের বেসরকারিকরণ কোনওদিনও হবে না। শুধু আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে রেলে বেসরকারি বিনিয়োগ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রেলের বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নিচ্ছেন এমন খবর সামনে আসায় সরব হয়েছিল বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গ তুলে রেলমন্ত্রী বলেন, রাস্তায় বেসরকারি গাড়ি চললে তার প্রতিবাদ কেউ করে না, কারণ সরকারি গাড়ির পাশাপাশি বেসরকারি গাড়িও মানুষকে সুবিধা দেয়। তবে রেলের বেসরকারিকরণ হবে না। রেলের আয় বাড়াতে ও আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে রেলে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। রেলমন্ত্রী আরও বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগ হলে ভারতীয় রেলের পরিকাঠামো আরও উন্নত হবে। যাত্রীদের উন্নতমানের পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে। রেলমন্ত্রীর বক্তব্য, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্র যদি একসঙ্গে হাত মেলায় তাহলে রেলের আয় আরও বাড়বে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ তথা পিপিপি মডেলে ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণ করাও সম্ভব। রেলমন্ত্রী বলেন, উনিশ সালের মার্চ মাসের পর থেকে রেল দুর্ঘটনায় একজনেরও মৃত্যু হয়নি। যাত্রী সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দিকে এখন বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রেলের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে আড়াই লক্ষ কোটি টাকা করা হয়েছে, যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল দেড় লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি।
ভারতীয় রেলে বেসরকারি বিনিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল গত বছর থেকেই। রেল সূত্রে জানানো হয়েছিল, রেল কোচ থেকে শুরু করে সেগুলির পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লগ্নি করবে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। ১৫১ টি আধুনিক যাত্রিবাহী ট্রেন চালাতে বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে দরপত্র চেয়েছিল রেল। ওই ১৫১টি ট্রেন দেশের ১০৯ জোড়া রুটে চলবে। সেই সব রুট চিহ্নিত ইতিমধ্যে করেছে সরকার। কেন্দ্র আশা করছে এই প্রকল্পে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করবে বেসরকারি সংস্থাগুলি। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, ৯০টি স্টেশনে বেসরকারি বিনিয়োগ করা হবে। দিল্লি-কলকাতা, শালিমার-পুণে, মুম্বই-দিল্লি, চেন্নাই-দিল্লি, পাটনা-দিল্লি, দিল্লি-গুয়াহাটি, চেন্নাই-হাওড়া ইত্যাদি রুট চিহ্নিত করা হয়েছে। দিল্লি-মুম্বই এবং লুধিয়ানা-ডানকুনি ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডর চালু হয়ে গেলে বেসরকারি উদ্যোগে ট্রেন চালানোর জন্য রুটের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।