দুর্গাপূজা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট চিঠি পাঠালো প্রধানমন্ত্রীকে। দুর্গাপূজা নিয়ে আপত্তিকর ও অবমাননাকর মন্তব্য বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুত চক্রবর্তীর। প্রতিবাদে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট চিঠি পাঠালো আচার্যকে। আশ্রমিক, প্রাক্তনি, নাগরিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক অবমাননাকর মন্তব্যের পর, বাংলার ঐতিহ্য মণ্ডিত দুর্গা পূজা নিয়ে আপত্তিকর এবং অবমাননাকর শব্দ প্রয়োগ করে চলেছেন উপাচার্য।
তার প্রতিবাদে দেশের প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্যের হস্তক্ষেপ চাইলো শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। উপাসনা গৃহ বা কাঁচঘর মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পত্তি। যদিও উপাসনাগৃহ দেখাশোনার দায়িত্বে বিশ্বভারতী এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে সর্বেক্ষণ বিভাগ। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে উপাসনাগৃহকে ব্যক্তিগত ক্রোধ বা আক্রোশ মেটাবার জায়গাতে পরিণত করেছেন উপাচার্য।
বুধবার সাপ্তাহিক মন্দিরে প্রস্তাবনার নাম করে কখনও আশ্রমিক, আবার কখনও প্রাক্তনী, ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য, সাধারণ নাগরিক কাউকেই রেয়াত করছেন না উপাচার্য। তাঁর পরনিন্দা পরচর্চার জন্যই দিন দিন মন্দিরে উপস্থিতির সংখ্যা কমছে। উপাচার্য দুর্গাপূজাকে কটাক্ষ করে বলেন, বাংলায় দুর্গাপূজার প্রচলন হয় বেনিয়া ব্রিটিশদের আনুকূল্য পেতেই। কে কত কাছে ইংরেজদের টানতে পারে, তারজন্য দুর্গাপূজা প্রবর্তন করেন ধনীরা। মন্দিরে কোনো ধর্মের সমালোচনা হবে না বা পৌত্তলিকতা নিয়ে আলোচনা করা যায় না, এমনটাই নিয়ম। সেই নিয়ম ভেঙে সব সীমা লঙ্ঘন করলেন উপাচার্য। মার্চের দুই তারিখ উপাসনালয়ে যথারীতি আশ্রমিক, প্রাক্তনীদের আক্রমণের পর দুর্গাপূজার ঐতিহ্য নিয়ে এই বিতর্কিত আলোচনা শুরু করেন তিনি।
উপাসনালয় মূলত: ‘একেশ্বর ব্রহ্ম মন্দির’ হলেও সেখানে সর্বধর্মের সমন্বয় ঘটে। এদিন নিরাকার উপাসনার কথা বলতে শুরু করে বাঙালির দুর্গা পূজার ঐতিহ্য নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য রাখলেন। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নিজস্ব ব্যক্তিগত একটা মতাদর্শ আছে। গোবলয়ের গৈরিক মতাদর্শ যারা বাঙালির দুর্গা পূজা ও তার ঐতিহ্য নিয়ে চিরদিন মিথ্যা প্রচার করে ভোট রাজনীতিতে ফায়দা লুঠতে বিশ্বাসী। উপাচার্যর এই ধরনের কথায় বাঙালির দুর্গা পূজার প্রতি বহিরাগত বিজেপির আসল চেহারা বের হয়েছে বলে মনে করছে এক পক্ষ।
উপাচার্যর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আচার্যকে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট বলেছে যে উপাসনাগৃহ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পত্তি সেখানে আশ্রমিক, নাগরিক ও প্রাক্তনীদের বিরুদ্ধে অপমানকর কথা বলছেন তিনি। যাতে আপত্তি আছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের। ট্রাস্ট এ ও বলছে যে উপাচার্য এই ট্রাস্টের ট্রাস্টি সদস্য হতে চাননি। ট্রাস্টের সম্পত্তির এভাবে অপব্যবহার করতে তাদের তীব্র আপত্তি আছে। যদিও, এব্যাপারে বিশ্বভারতীর জন সংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।